প্রসূতি মায়ের প্রাণ সংশয় দেখা দিলেও গর্ভপাত করা যাবে না। শতাব্দীপ্রাচীন আইনকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে গত শুক্রবারই গণভোটে অংশ নিয়েছিল আইরিশরা। মান্ধাতার আমলের এই আইন পাল্টাতে চায় আয়ারল্যান্ডের গরিষ্ঠ অংশ, প্রমাণ মিলেছিল বুথ ফেরত সমীক্ষাতেও। শেষ পর্যন্ত অক্ষরে অক্ষরে সত্যি হল সেটাই। সিএনএন সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩১ লক্ষ আইরিশ নাগরিক অংশগ্রহণ করেন গণভোটে। গর্ভপাতকে স্বীকৃতি দেওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছেন প্রায় ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ। অর্থাৎ মোট ভোটের দুই-তৃতীয়াংশ। প্রসঙ্গত, ইউরোপের দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে রক্ষণশীল সমাজ আয়ারল্যান্ডের। ক্যাথলিক খ্রিস্টানদের দেশে চার্চের প্রভাব অসীম। তারাই বিভিন্ন বিষয়ে এদেশে শেষ কথা বলে। একজন মায়ের জীবনের সমান গুরুত্বপূর্ণ তাঁর গর্ভে থাকা ভ্রুণ। কাজেই গর্ভপাত ক্যাথলিক ধর্মাবলম্বীদের চোখে মহাপাপ। সেজন্য আইন করে গর্ভপাত নিষিদ্ধ করা হয়।
২০১২ সালে আয়ারল্যান্ডের কড়া গর্ভপাত বিরোধী আইনের গেরোয় অকালে প্রাণ গিয়েছিল সবিতা হলপ্পনাবার নামে ৩১ বছরের ভারতীয় বংশোম্ভূত চিকিৎসকের। শারীরিক জটিলতার কারণে ১৭ সপ্তাহের অন্তঃস্বত্বা সবিতার গর্ভপাতের অনুরোধ করেছিলেন পরিবারের লোকেরা। অনুমতি না মেলায় অকালে মরতে হয় তাঁকে । ২০১৬ সালে রাষ্ট্রসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিল গর্ভপাত বিরোধী সাংবিধানিক সংশোধনীকে অমানবিক আখ্যা দিয়ে নতুন আইনের সুপারিশ করে। অনেক প্রতিবন্ধকতা পেরিয়ে, গর্ভপাতকে স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়ে গণভোটের আয়োজন করা হয়। শুধু সে দেশের নাগরিকই নয়, প্রবাসী আয়ারল্যান্ডবাসীও এই গণভোটে অংশগ্রহণ করেন। শেষ পর্যন্ত জনতার রায়ে গর্ভপাত আইন সিদ্ধ হতে চলেছে সেদেশে।
Be the first to comment