এক পয়সা নিয়ে এরকম হুলস্থূল স্মরণাতীত কালে হয়নি। এই মুদ্রাস্ফীতির বাজারে এক পয়সার হিসেব কেউ রাখে না, বাস্তবিকই এক পয়সা তৈরি হওয়া বন্ধ হয়ে গেছে সেই কবে। প্রবীণরা বলছেন, ষাটের দশকে ট্রাম ভাড়া বৃদ্ধি পেয়েছিল এক পয়সা। প্রতিবাদে পথে নেমেছিলেন বামেরা। আগুন জ্বলেছিল রাস্তায়। সেই আন্দোলনই পরবর্তী সময়ে যুক্তফ্রন্ট গড়ার পথ প্রশস্ত করে দেয়। রসিকেরা বলছেন, এক পয়সার গুরুত্ব আর বুঝতেন টমাস বাটা। তার সংস্থার সমস্ত জুতোর দামই শেষ হতো ৯৯ পয়সা দিয়ে। ক্রেতারা কি বাকি এক পয়সা ফেরত পেতেন? ওই যে, এক পয়সার হিসেব রাখা ছেড়ে দিয়েছেন মানুষ।
অঙ্কে পাকা মাথারা অবশ্য এক পয়সার গুরুত্ব ঠিকই বোঝেন। এক পয়সার ভাড়া বৃদ্ধির দরুণ কত টাকার ট্রাম বাস পুড়েছিল, তার হিসেব যেমন বেরিয়েছে, ৯৯ পয়সা দামের দরুণ জুতো কোম্পানির লাভের হিসেবও বার করে ফেলেছেন হিসেবরক্ষকরা। তারাই হিসেব করে ফেলেছেন ভারতের বাজারে প্রতিদিন ৪০ লক্ষ ব্যারেল জ্বালানির প্রয়োজন হয়। এরমধ্যে পেট্রোল খরচ হয় প্রতিদিন ১০ কোটি লিটার, ডিজেল কমবেশি ২৯ কোটি লিটার। এক পয়সা দাম কমায় পেট্রোল বাবদ রোজগার কমবে প্রতিদিন ১০ কোটি টাকা, ডিজেলে ২৯ কোটি টাকা। আর যদি জুতোর মত পেট্রোলের এক পয়সাও না পাওয়া যায়, তাহলে প্রতিদিন এই বাড়তি ৩৯ কোটি টাকা যাবে পেট্রোল মালিকের পকেটে। বছরে ১১০৫ কোটি টাকা। অর্থাত্ এক পয়সা মূল্য কমায় সরকারের কোষাগারে বছরে ১১০৫ কোটি টাকা কম ঢুকবে। কিন্তু এই ১১০৫ কোটি টাকা কি সাশ্রয় হবে সাধারণ মানুষের। এক পয়সার হিসেবও যে এত জটিল হতে পারে, কে জানত।
Be the first to comment