আর্যতীর্থঃ
( ১)
কিছু গাছ খুন হলো দিনেদুপুরে। চোখের সামনে ।
বিভৎস করাতের দাঁত, ছিঁড়েখুঁড়ে নিয়ে গেল ডাল সহ পাতা।
শিকড় যেটুকু ছিলো, খুঁচিয়ে মারলো তাকে প্রবল শাবল।
আমরা নিরুত্তাপ, দুয়েকটা আহা ইস পাড়াতুতো খুনের গল্পে।
শুধু, তারপর থেকে আর কোকিল ডাকেনি এখানে।
(২)
গলিটা অপরিসর, বস্তুত গাড়ি ঢুকবে, পূর্বপুরুষেরা ভাবেনি কখনো।
যেমন ভাবেনি টালি টিন দরমার বেড়া, বড় হয়ে বহুতল হবে।
ভাঙাচোরা পলেস্তরাখসা এক দেড়তলা যে যেখানে ছিলো,
ভোল বদলিয়ে নিয়ে ঝক্কাস্ আধুনিক ফ্ল্যাট হয়ে গেছে।
জেঠিমা আর মেসোমশাইরা সময়ের ফায়ারিং স্কোয়াডের সামনে লুটিয়ে পড়েছেন।
(৩)
চোদ্দ বছরে সিগারেট, সেটাও আবার স্কুলে। অশ্রুতপূর্ব নয়।
ধরা পড়ে শিক্ষকের ধমক ,স্কুল থেকে চিঠি। অভূতপূর্ব নয়।
পরের দিন মৃগীর খিঁচুনি। হাসপাতাল।মিডিয়ায় ইন্টারভিউ।
ব্রেকিং নিউজ।
কর্তৃপক্ষ স্বীকার করেছেন শিক্ষকের দোষ। সাধারণ ঘটনা।
শুধু তালেগোলে এক শিক্ষক মারা গিয়ে চাকুরিজীবির জন্ম হলো। RIP.
(৪)
কলেজের উদ্দাম বন্ধুত্বে দারু থেকে পর্ন, সবকিছু চলে।
ছেলে মেয়ের ভেদাভেদ থাকে না বিশেষ , কাম্যও নয় সেটা।
একসাথে পানশালা , সিগারেট ধোঁয়া আর আমিষ চুটকি।
মেয়েটা শুনতে পেলো তার বন্ধুরা আড়ালে তার দেহাংশ ব্যবচ্ছেদ করে।
স্বাধীন একটা পাখী ডানা মুড়ে ঝরে যায়, মরে দুম করে।
(৫)
হাসপাতালে রোগীর শেষ দিন।না না, ভাঙচুরের গল্প নয় এটা।
রোগী সুস্থ। বাড়ির লোক করজোরে ডাক্তারের সামনে। নিবেদন সহ।
টাকা কিছু শর্ট আছে। আপনার পয়সাটা পরে দিয়ে যাই?
চেক আপে তো আসবোই এক সপ্তাহে। বর মঞ্জুর হয়।
সপ্তাহ পার হয়ে বছর গিয়েছে। বিশ্বাস মরে গিয়ে চেম্বারে পড়ে আছে পোড়খাওয়া স্টেথোস্কোপ।
Be the first to comment