পেপ গুয়ার্দিওয়ালা বললে তিনি দশ তলার ছাদ থেকে নির্দ্বিধায় ঝাঁপ দিতে পারেন। ম্যান সিটি কোচের জন্য এটা তাঁর অদম্য ভালবাসা বা শ্রদ্ধা বলতে পারেন। আবার এটাও বলতে পারেন, গুয়ার্দিওয়ালার জন্য তাঁর মনে রয়েছে নিঃশর্ত আনুগত্য। যাই বলুন না কেন, মহাবিশ্বে গুয়ার্দিওয়ালার একনিষ্ঠ ভক্ত, অনুসরণকারী বলে কেউ থাকলে তাঁর নাম মাতিয়াস মান্না।
ভারতীয় ফুটবল সমর্থকদের কাছে নামটা নতুন হতে পারে। তবে বিশ্ব ফুটবলে চেনা নাম। দীর্ঘ দিন ধরে পেপ গুয়ার্দিওয়ালার হয়ে ব্লগ লেখেন তিনি। ছোটবেলায় একবার বাবার হাত ধরে মাদ্রিদে গিয়েছিলেন মাতিয়াস। ম্যাচ শেষে গুয়ার্দিওয়ালা তাঁকে নিজের জার্সি উপহার দিয়েছিলেন। ব্যস, বারসার তারকার সেই ভালবাসা তাঁকে গুয়ার্দিওয়ালার ‘ফ্যানবয়’ করে তুলেছিল। পেপের প্রতি সেই প্রচণ্ড ভালবাসা এখনও বয়ে বেড়াচ্ছেন মাতিয়াস। যাই হোক, গুয়ার্দিওয়ালার ব্লগ লেখা একজনের কথা বিশ্বকাপের মধ্যাহ্নে ফলাও করে বলা কেন? কারণ, সেই মাতিয়াস এখন আর্জেন্টিনা দলের সঙ্গে যুক্ত। মেসির দলের ফুটবল অ্যানালিসিস্ট তিনি।
মাতিয়াসের সব সময় মনে হয়েছে, গুয়ার্দিওয়ালা যে স্টাইলে ফুটবল খেলান সেটা গতে বাঁধা ছক নয়। মাতিয়াস আবার এটাও বিশ্বাস করেন, মেসি যে স্টাইলে ফুটবল খেলেন সেটাও চেনা ছকের বাইরে। ৩৪ বছরের এই আর্জেন্টাইন সব সময় চেনা ছকের বাইরে থাকা মানুষদের অনুসরণ ও অনুকরণ করতে ভালবাসেন। আর্জেন্টিনা কোচ জর্জে সাম্পাউলির তাঁর উপর নির্ভরতা রয়েছে। রোজারিও বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কমিউনিকেশনে স্নাতক মাতিয়াস আসার পর থেকে আর্জেন্টিনা দলের বাতাবরণ পাল্টেছে। এমনকী স্বয়ং মেসির খেলার স্টাইলেও মাতিয়াসের প্রভাব রয়েছে।
মাতিয়াস বলছিলেন, ”আগে টিম মিটিং হলে আমি একটা ব্যাপার লক্ষ্য করতাম। সবাই ছয় থেকে আট মিনিট কথা বলার পর কেমন যেন আনমনা হয়ে পড়ছে। বুঝতে পারলাম এটা মনোযোগের অভাব। আমি দলের সবাইকে নিজের তৈরি একটা গেম খেলাতে বসালাম। স্যান্ডবল। কি বোর্ড ও জয় স্টিক, দুটোই নিয়ন্ত্রণ করতে হয় এই গেমে। অনেকটা কম্পিউটার গেম ফিফার মতোই স্যান্ডবল। আর্জেন্টিনা দলের সবাই মনোযোগ দিয়ে স্যান্ডবল খেলছে লক্ষ্য করলাম। কিছুদিনের মধ্যে সবার মনোযোগে উন্নতি হল। এমনকী, আমরা অনেক ম্যাচে গেমপ্ল্যান ওই গেম থেকেই ঠিক করি। মেসিও স্যান্ডবল খেলতে খেলতে নিজের প্লেয়িং স্টাইলের ভুলগুলো শুধরে নেয়। কোপা আমেরিকার আগে ও দিনের মধ্যে বেশিরভাগ সময় স্যান্ডবল খেলত। আমাকে বলেছিল, এই গেমটা থেকে ও নিজের খেলার ভুলত্রুটিগুলো শোধরানোর সুযোগ পেয়েছে। তা ছাড়া বক্সের কাছে ওর মুভমেন্ট কেমন হবে সেটাও অনেক সময় ও স্যান্ডবল থেকে ঠিক করে নেয়।’
Be the first to comment