কারও একটা খাবার থেকে অ্যালার্জি হতে পারে, আবার বিভিন্ন খাবার থেকেও হতে পারে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যখন খাবারে থাকা কিছু প্রোটিনকে ভুলবশত ক্ষতিকারক হিসেবে চিহ্নিত করে, তখন অ্যালার্জি দেখা দেয়। কিছু কিছু প্রোটিন বা প্রোটিনের অংশ সহজে হজম হয় না। সেসব প্রোটিনকে ইমিউনোগ্লোবিন বাহ্যিক আক্রমণকারী উপাদান হিসেবে চিহ্নিত করে। এ জন্যই শরীরে অ্যালার্জিজনিত প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়।
খাবার পর থেকে ২ ঘণ্টার মধ্যে অ্যালার্জি শুরু হতে পারে। ত্বকে প্রথমে লাল লাল দানা বের হয়, সঙ্গে থাকে চুলকানি। চুলকানির কারণে হাত-পা ফুলেও যেতে পারে। কখনও ডায়রিয়া, পেটে ব্যথা, বমিও হতে পারে। গুরুতর হলে হতে পারে শ্বাসকষ্টের সমস্যা। বিভিন্ন খাবারে যদি অ্যালার্জি থাকে, সে ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো দরকার। মুখ শিরশির করতে পারে, ঠোঁট, মুখ, গলা ফুলে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে যেসব খাবারে অ্যালার্জি হচ্ছে তা এড়িয়ে চলাই ভালো। প্রয়োজনে সঠিক চিকিৎসা নিতে হবে।
পরিবারে কারও এমন সমস্যা থাকলে অন্যের হওয়ার শঙ্কা বেশি থাকে। ৩ বছরের নিচের শিশুদের খাবারে অ্যালার্জি সাধারণত বেশি থাকে। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে এটা কমতে থাকে। একজিমা, অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীদের বিভিন্ন খাবারে অ্যালার্জি থাকার শঙ্কা আরও বেশি। নির্দিষ্ট কিছু খাবার আছে যেগুলো অন্য খাবারের তুলনায় বেশি অ্যালার্জি সমস্যা তৈরি করে। ভুট্টা, জেলাটিন, গরুর মাংস, ভেড়ার মাংস, মুরগির মাংস, কিছু বীজ (সূর্যমুখী, তিল, পোস্ত ইত্যাদি), মশলায় (কেওড়া, ধনে, রসুন, সরষে ইত্যাদি) অ্যালার্জি দেখা দিতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে দুধ, ডিম, চকলেট, বাদাম, গমের তৈরি খাবার, কিছু সবজি, কিছু মাছ—সাধারণত অ্যালার্জি তৈরি করতে পারে।
প্রতিরোধই হচ্ছে অ্যালার্জি রোধ করার সবচেয়ে ভালো উপায়। কোন কোন খাবারে অ্যালার্জি আছে সেটা জানার জন্য একটা করে সন্দেহজনক খাবার এক দিন করে খেতে হবে এবং তিনদিন ধরে দেখতে হবে যে শরীরে অ্যালার্জিক প্রভাব হচ্ছে কি না। খাবারে অ্যালার্জি হচ্ছে এটা মনে হলে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া দরকার।
সবচেয়ে ভালো উপায় হলো যেসব খাবারে অ্যালার্জি হচ্ছে তা এড়িয়ে চলা। চুলকানি, ত্বকে দানা বের হলে মুখে খাওয়ার অ্যান্টি অ্যালার্জিক ওষুধ ভালো কাজ করে। এর সঙ্গে দানাগুলোতে লাগানোর জন্য ক্রিম ও মলম দেওয়া হয়। তবে সমস্যা বেশি হলে স্টেরয়েড ইনজেকশন দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে।
Be the first to comment