বোধহয় সবথেকে আগে ভিতরে ঢুকেছিলেন তিনি। কিন্তু নিশ্চিতভাবেই সবার শেষে বেরিয়েছেন। তিনি এক্কাপোল আকে চান্তাওয়ং। ওয়াইল্ড বোরস ফুটবল টিমের ২৫ বছর বয়সী কোচ। ১৭ দিন উত্তর তাইল্যান্ডের চিয়াং রাইয়ের গুহায় আটকে থাকার পর মঙ্গলবার তার টিমের খুদে ফুটবলাররা সবাই বেরোনের পর তিনি বাইরে এসেছেন।
চূড়ান্ত অবিবেচনার জন্য এক্কাপোল অনেকের কাছেই নিন্দিত, সমালোচিত। এভাবে ঘোর বর্ষায় মধ্যে সরু অন্ধকার গুহায় বাচ্চাদের নিয়ে যায় কেউ? যারা তাকে চেনে না তারা এমন বলতেই পারে। কিন্তু তাঁর গ্রামের মানুষজন কিন্তু একমত নন। তিন কুলে থাকার মধ্যে আছে তাঁর দুই আত্মীয়। থাম্মা কান্তাওং তাঁর কাকি। আর তাঁর বৃদ্ধা ঠাকুমা। তাঁর গ্রাম মাই সাইয়ে ভাঙাচোরা হতদরিদ্র বাড়িতে বসে থাম্মা শোনান এক্কাপোলের জীবন কাহিনি।
“যখন এক্কাপোল খুবই ছোট, ওর মা মারা যান। মাত্র দশবছর বয়সে চলে যান বাবাও। এমনকী, তাঁর একমাত্র ভাইও মারা গিয়ে খুব অল্পবয়সে। থাকার মধ্যে রয়েছে কেবল বাবা, মা, ভাইকে নিয়ে তোলা একটা গ্রুপ ফটো। তাইল্যান্ডের আর পাঁচটা অনাথের যা গতি, তাঁরও সেটাই হয়েছিল। মাই সাই ছেড়ে লুম ফুনের মঠে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী হয়ে চলে যাওয়া। মাঝেমধ্যে ঠাকুমার সঙ্গে দেখা করতে আসা ছাড়া গ্রামের সঙ্গে আর যোগই ছিল না তাঁর।”
বয়স কুড়ির কোঠায় আসতেই ফিরে আসেন এক্কাপোল। মঠ ছাড়লেও ছাড়েননি পুজোআচ্চার পাট। মন্দিরগুলিকে সাফসুতরো রাখার স্বেচ্ছাসেবাও রয়েছে তাঁর। এই ধার্মিক পরোপকারী মনোবৃত্তির জন্য এক্কাপোল তাঁর নিজের খাবার বাচ্চাদের মধ্যে ভাগ করে দিয়েছে প্রথম ৯ দিন। তারপর উদ্ধারকারীরা খোঁজ পান তাঁদের। ফুটবল টিমকে ভালোবাসেন তিনি। সবসময়ই তাঁর পিছনে পিছনে ঘুরে বেড়াত বাচ্চারা। তিনিও বাইকে চাপিয়ে ঘুরে বেড়াতেন বাচ্চাদের নিয়ে। সামান্য বৃত্তি নিয়ে এক্কাপোল বহু কোচিং সেশন চালিয়েছেন ক্লাবে।
Be the first to comment