বড়সড় বিপর্যয়! ‘দল’ হারতেই দলবদল তৃণমূলের প্রথম সারির নেতা-মন্ত্রীদের। বিশ্বকাপ শুরুর আগে পর্যন্ত যে দলের সমর্থনে গলা ফাটিয়েছেন, আজ তাঁরাই মুখ ফিরিয়ে নিলেন। একদা লাতিন আমেরিকার দেশগুলোর সমর্থক ছিলেন যারা, তারাই আজ একেবারে একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে ইউরোপিয়ান ফুটবলের ফ্যান। এমনকি বিশ্বচ্যাম্পিয়নদের থেকেও সমর্থন তুলে নিলেন হেভিওয়েটদের অনেকে!
ফুটবলের জার্সি বদলে সবার শীর্ষে পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। রাজনৈতিক জীবনের মতোই সুব্রতবাবু এখানেও দলবদলে সবার থেকে এককাঠি উপরে। যার যখন পাল্লা ভারী, মন্ত্রী তখন সেখানেই। রাশিয়া বিশ্বকাপে শুরু থেকেই সুব্রত মুখোপাধ্যায় ছিলেন বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের ফ্যান। আর জার্মানি বিদায় নিতেই তিনি দলবদলে হয়ে গেলেন ইংল্যান্ড। এখানেও থিতু হলেন না! সেমিতে ক্রোয়েশিয়ার কাছে থ্রি-লায়ন্সরা হারতেই মন্ত্রী মশাই এখন ফরাসি সমর্থক। সুব্রত মুখোপাধ্যায় অবশ্য এই জার্সি বদলকে দলবদল বলতে নারাজ। ‘নীতিতে অবিচল’ এই নেতা তাঁর দলবদলের সপক্ষে বলছেন, “আমি ইউরোপে ছিলাম, ইউরোপেই আছি”।
সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের মতো ফ্রান্সকেই সমর্থন করছেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক ওরফে বালু দা। খাদ্যমন্ত্রী নাকি প্রথম দিন থেকেই ব্রাজিল ছিলেন। শেষ ষোলো পর্যন্তও সাম্বার দেশের অনুরাগী ছিলেন তিনি। তবে বেলজিয়ামের কাছে হারতেই জ্যোতিপ্রিয়র কাছে ‘অপ্রিয়’ হয়ে গেলেন নেইমাররা । আর তারপরই দল বদলে ফেললেন ‘ব্রাজিল অন্ত প্রাণ’ বালু দা। ফাইনালে তাঁর ফেভারিট হয়ে গেল জিদানের দেশ ফ্রান্স।
এই তালিকায় আছেন ‘মেসি ভক্ত’ মদনও। প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রী ছিলেন আর্জেন্টিনা, হলেন ফ্রান্স। মজার বিষয়, দল বদল করলেও রং-এ একই আছেন মদন মিত্র। নীল-সাদাই তাঁর এক এবং অন্তিম পছন্দ। ‘রঙিন মনের মানুষ’ মদন মিত্রের সাফাই, “ফ্রান্স বেশ ভাইব্রেন্ট, তাই ওদেরকেই সমর্থন করছি”।
বিশ্বকাপের এই দলবদলে সামিল বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভেনদেবও। প্রথম দিন থেকেই পেলের দেশকে ভালবাসেন, পছন্দ করেন। বিশ্ব ফুটবলে পাঁচ তারাওয়ালা হলুদ জার্সিই ছিল তাঁর প্রথম এবং শেষ পছন্দ। তবে দলবদলের হিড়িকে বক্সারও জার্সি বদলে ফেললেন। অরূপ বিশ্বাসের মতো তিনিও তাঁর ভোট দিয়েছেন লুকা মদ্রিচকেই । শোভেনদেবের কথায়, “আমি ব্রাজিলের সমর্থক। আমার দল আগেই হেরে গিয়েছ। তবে ক্রোয়েশিয়ার মতো একটা ছোট দেশ যেভাবে বিশ্বকাপে তাক লাগিয়ে দিয়েছে তা অভাবনীয়। আমি ওদেরই সমর্থন করব”।
Be the first to comment