মেদিনীপুর কলেজ মোড়ের সভায় আহতদের জন্য অত্যন্ত চিন্তিত। আমরা তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। আহতদের সবাইকে সবরকম সাহায্য ও সহযোগিতা করা হবে। কিন্তু সভার আয়োজকদের এই দুর্ঘটনার দায় নিতেই হবে। সোমবার মেদিনীপুরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সভা শেষের পর সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে একটি প্রেস রিলিজ প্রকাশিত হয়। তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় ও সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েনই এটি প্রকাশ্যে আনেন।
এখন তৃণমূলের বিরুদ্ধে আনা প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ গুলোর একের পর এক উত্তর দেওয়া হল-
পয়েন্ট- ১
ভুল বনাম বাস্তব # ১
প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দাবি করেছেন এদিন তিনি যখন সভায় যোগ দিতে আসছিলেন তখন তিনি রাস্তায় প্রায় একশোরও বেশী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পোস্টার দেখেছেন। ওই ছবিগুলি ২১ জুলাই, শহীদ দিবসের মিছিলের জন্য, যা চলতি বছরে ২৫ তম বর্ষে পদার্পণ করতে চলেছে। কিন্তু আজ মুখ্যমন্ত্রীর বেশ কয়েকটি পোস্টার ও ব্যানার বিজেপি কর্মীরা ছিঁড়ে দেয় বলে অভিযোগ।
পয়েন্ট- ২
ভুল বনাম বাস্তব# ২
এদিনের সভায় উপস্থিত বেশীরভাগ মানুষই প্রতিবেশী রাজ্য যেমন, ঝাড়খন্ড, ওড়িশ্যা এবং পাটনা থেকে গাড়ি ভাড়া করে আনা হয়েছিল। কিন্তু সভায় হাতে গোনা কয়েকজন স্থানীয় ও কৃষকরা উপস্থিত ছিলেন। এই সভাকে কেন্দ্র করে বিশাল পরিমান কর্পোরেট মানি খরচ করা হয়েছে, কিন্তু এর নেট ফলাফল কী? এতে কীভাবে কৃষকরা উপকৃত হল?
পয়েন্ট- ৩
ভুল বনাম বাস্তব# ৩
আমরা জানতে চাই কীভাবে বিজেপি কৃষকদের রোজগারকে দ্বিগুণ করবে? বহু বছর আগে বিজেপি এই ঘোষণা করলেও এতদিনেও তা বাস্তবায়িত হয়নি। তবে এখন বিজেপির নেতাদের কাছে বাংলার কৃষকদের আয়ের খতিয়ান তুলে ধরা হল-
বিগত সাত বছরে বাংলার কৃষকদের আয় ২.২৫% বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১১ সালে বাংলার কৃষকদের আয় ছিল ৯১,০০০ টাকা। তবে এখন সেই আয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ লক্ষ ৯০ হাজার টাকা। আর এসবই সম্ভব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস সরকারের বদান্যতায়।
পয়েন্ট- ৪
ভুল বনাম বাস্তব# ৪
এছাড়াও এদিন দেশে কৃষক মৃত্যুর সংখ্যার একটি সংসদীয় রিপোর্টও পেশ করা হয় তৃণমূল কংগ্রেসের পক্ষ থেকে।
রিপোর্টে প্রকাশ পেয়েছে, ২০১৭ সালের প্রথম দিকে মহারাষ্ট্রে ৬৩৫ জন কৃষক আত্মহত্যা করেছিলেন। কিন্তু সেখানে বাংলায় কৃষক মৃত্যুর সংখ্যা জিরো।
আশা করি বিজেপি নেতারা প্রশ্নের উত্তর পেয়েছেন। আর এই সংখ্যাই বলে দেয় দেশে কৃষকদের বর্তমান অবস্থার সত্যিকারের অবস্থান আর বাংলায় তাদের অবস্থানের কথা।
পয়েন্ট- ৫
ভুল বনাম বাস্তব# ৫
সিন্ডিকেট- সিন্ডিকেটের বিষয়ে বিজেপি নেতাদের থেকে ভালো আর কেই বা জানে?
বিজেপি একটি সিন্ডিকেট দল, যা ধর্মীয় চরমপন্থাকে উস্কানি দেয়।
আপনাদের দল ধর্মান্ধ সিন্ডিকেটদের দল।
আপনাদের দল দন্ডপ্রাপ্ত বা সাজাপ্রাপ্ত সিন্ডিকেটদের দল।
আপনাদের দল নির্যাতন সিন্ডিকেটের দল।
আপনাদের দল দুর্নীতির সিন্ডিকেটের দল। তাই বিজেপির নেতারা আগুন নিয়ে খেলে না।
পাশাপাশি বিজেপি নেতাদের উদ্দেশ্যে তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্বের প্রশ্ন আপনারা আপনাদের সংস্থার সঙ্গে আমাদের হয়রান করার চেষ্টা করে দেখুন, আমরা কোনো সিন্ডিকেটের সামনে মাথানত করব না।
বাংলা সবার জন্য। বিশ্বের সংস্কৃতির রাজধানী বাংলাই। সোমবারের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য প্রমান করে দেয় যে বিজেপির কোনও উন্নয়নমূলক কর্মসূচীই নেই। প্রধানমন্ত্রী এদিন মেদিনীপুরে এলেন আর ‘রাজনৈতিক ভাষণ’ দিয়ে চলে গেলেন।
আর যার সারফল শুধুমাত্র জিরো- জিরো- আর জিরো।
Be the first to comment