জেলে বন্দি থাকার সময়ে লেখা আত্মজীবনীর অংশ

Spread the love
আমার অভিভাবক গোষ্ঠীপতি চাইতেন না যে আমি কুনুতে যাই। তাঁর বক্তব্য ছিল, সেখানে গেলে আমি কুসংসর্গে পড়ে স্কুল থেকে পালিয়ে যেতে পারি। তিনি আমাকে মাত্র কয়েক দিনের জন্য বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দিতেন। অন্যান্য সময় তিনি আমার মাকেই আমার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য রাজকীয় নিবাসে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করতেন। কিন্তু কুনুতে গিয়ে মা, বোনেরা ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার বিষয়টি আমাকে খুবই টানত। বিশেষ করে আমার খুড়তুতো ভাই আলেকজান্ডার ম্যান্ডেলার সঙ্গে দেখা করার সময়টা আমি দারুণ উপভোগ করতাম। আমার জীবনের প্রথম দিককার দিনগুলোতে সে শিক্ষাবিষয়ক নানা প্রশ্নের আলোচনা করে আমাকে সব সময় উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করত। সে আর আমার চেয়ে বয়সে অনেক বড় খুড়তুতো বোন ফাথিবে রানুগু সম্ভবত আমাদের গোষ্ঠীতে প্রথম শিক্ষকতা পেশায় যাওয়ার যোগ্যতা অর্জন করে। আমি বিশ্বাস করি, তাদের উপদেশ ও ধৈর্যশীল প্ররোচনার ফলেই আমি ক্লাসের বাইরের সহজ জীবনের হাতছানি এড়াতে সফল হয়েছিলাম।
তখনকার দিনগুলোতে গোষ্ঠী-নেতৃত্ব ও গির্জাসংক্রান্ত ভাবনা আমাকে প্রবলভাবে প্রভাবিত করত। কারণ, আমি যে বীরদের কথা তখন শুনতাম, তাঁরা সবাই বিভিন্ন গোষ্ঠীর প্রধান ছিলেন। কৃষ্ণাঙ্গ ও শ্বেতাঙ্গ—দুজনের কাছ থেকে তাঁরা যে সম্মান পেতেন, সেটাই হয়তো আমার মনে ওই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে বাড়তি গুরুত্বের ধারণা তৈরি করেছিল। আমার মনে হতো গোষ্ঠীপতিকে ঘিরে শুধু সমাজজীবনটাই আবর্তিত হয় না, বরং তাঁরাই সমাজের মূল প্রভাবক, ক্ষমতাশীল ও মর্যাদাপূর্ণ ব্যক্তি হিসেবে মান্য।
একইরকম গুরুত্বপূর্ণ ছিল গির্জার অবস্থানও। যদিও বাইবেলের নির্দেশমতো বৈষয়িক ও মতবাদভিত্তিক দিক থেকে আমি সরাসরি গির্জার সঙ্গে বিশেষ যুক্ত হইনি, তবু ব্যক্তিগতভাবে রেভারেন্ড মাতিওলোর সঙ্গে আমার গভীর যোগাযোগ ছিল।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*