বিয়ের মন্ত্রোচ্চারণ বা বিয়ের রেজিস্ট্রি পেপারে সই করে দেওয়ার মানেই এটা নয় যে, যৌনতার জন্য বিবাহিতা স্ত্রীকে সবসময় প্রস্তুত থাকতে হবে ৷ অর্থাৎ বিয়ে হয়ে গিয়েছে বলেই স্বামী যৌনমিলনের ইচ্ছায় সবসময় সম্মত হতে হবে স্ত্রীকে তার কোনও মানে নেই ৷ বৈবাহিক ধর্ষণ নিয়ে দায়ের হওয়া একটি মামলায় এমনটাই পর্যবেক্ষণ দিল্লি হাইকোর্টের ৷
বৈবাহিক ধর্ষণকে অবিলম্বে ‘অপরাধ’ হিসেবে মান্যতা দেওয়ার দাবিতে দিল্লি হাইকোর্টে দায়ের হয় একটি পিটিশন ৷ সেই পিটিশনের শুনানিতেই মঙ্গলবার এই আদালতের এই পর্যবেক্ষণ সামনে আসে ৷ হাইকোর্টের মুখ্য বিচারপতি গীতা মিত্তল ও সি হরি শঙ্করের বেঞ্চ জানায়, শারিরীক সম্পর্ক স্থাপনে না বলার অধিকার পুরুষ মহিলা উভয়েরই আছে ৷ বিবাহিত সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই অধিকার কোনওভাবেই লুপ্ত হয়ে যায় না ৷
হাইকোর্টের মতে, বিয়ে মানেই শারিরীক সম্পর্কের ফ্রি পাস নয় ৷ তেমনি বিয়ে মানেই একজন স্ত্রীকে সবসময় যৌনতার জন্য সম্মত থাকতে হবে এমন নয় ৷ স্বামী চাইলেই তাঁর শারিরীক চাহিদাকে পূরণের জন্য স্ত্রীকে জোর করতে পারেন না ৷ বিয়ের ক্ষেত্রে বা বৈবাহিক ধর্ষণের প্রশ্নে যৌনমিলনে যে স্ত্রীয়ের সম্মতিতেই হয়েছে তা স্বামীকেই প্রমাণ করতে হবে ৷
মেন ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট আদালতের এই মতের বিরোধিতা করে একটি পিটিশন দায়ের করেছিল ৷ তাতে আদালত অসম্মতি প্রকাশ করলেও জানিয়েছে, ধর্ষণের ক্ষেত্রে শুধু বল প্রয়োগ নয়, নির্যাতিতার শরীর ও মনের আঘাতের দিকেও নজর দিয়ে বিচার করা হয় ৷ বর্তমান সমাজে ধর্ষণের সংজ্ঞা নতুন করে নির্ধারিত হয়েছে ৷
ফাউন্ডেশন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও অল ইন্ডিয়া ডেমোক্রেটিক ওম্যান অ্যাসোসিয়েশনের তরফে দাবি তোলা হয়েছিল যে, ভারতীয় দন্ডবিধির ৩৭৫ ধারায় বিবাহিত মহিলাদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা হয়েছে ৷ যেখানে বলা হয়েছে, বিবাহে নারী-পুরুষের মধ্যে যৌন মিলনকে কখনই ধর্ষণ বলা যাবে না ৷
Be the first to comment