উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে দালালরাজ নতুন কথা নয়৷ দালালরাজ রুখতে বিভিন্ন সময় একাধিক পদক্ষেপ নিয়েছিল মেডিকেল কর্তৃপক্ষ৷ কিন্তু দালালরাজ কমেনি। ফের দালালরাজ রুখতে কড়া পদক্ষেপ নিতে চলেছে কর্তৃপক্ষ। একইসাথে কড়া পদক্ষেপ নিচ্ছে পুলিশ প্রশাসনও। তবে দালালরাজ যে পুরোপুরি বন্ধ করা সম্ভব নয়, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন মেডিকেলের রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান ডা: রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য।
মেডিকেলে দালালরাজের বিরুদ্ধে ফের সরব হয়েছেন চেয়ারম্যান। ব্যবস্থা নিচ্ছে উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ফাঁড়ির পুলিশ। পুলিশের অভিযানের শুরুতেই গতকাল দু’জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ তাদের শিলিগুড়ি মহকুমা আদালতে তোলা হবে৷
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে ধৃতরা হল সঞ্জয় দাস ও মহম্মদ তাইবুর। সঞ্জয় মেডিকেল মোড় এলাকার বাসিন্দা। তাইবুরের বাড়ি চটহাট এলাকায়। তাদের মেডিকেলের বহির্বিভাগে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাঘুরি করতে দেখে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। শুধু এই দুজন নয়, মেডিকেলে দালালরাজের নেপথ্যে আরও অনেক মাথা রয়েছে বলে খবর। তাদের বিরুদ্ধেও অভিযান চলবে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
গতকাল মেডিকেলে পুলিশের অভিযানের কিছুক্ষণ বাদে বহির্বিভাগ পরিদর্শনে যান রুদ্রবাবু। তখন চক্ষু বিভাগের আউটডোরের এক ইন্টার্ন রুদ্রবাবুকে অভিযোগ করেন, ওই বিভাগের চিকিৎসক সকালে এসে হাজিরা খাতায় সই করেই চলে গিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে চক্ষু বিভাগের প্রধানের কাছে কৈফিয়ত চান রুদ্রবাবু। তাঁকে ধমক দিয়ে বিভাগের সমস্ত বিষয়ে নজর রাখতে বলেন।
রুদ্রবাবু বলেন, “খাতায় সই করেই চলে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা৷ এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বায়োমেট্রিক অ্যাটেন্ডেন্স চালু করা হচ্ছে। তবে কারও মধ্যে মূল্যবোধ না থাকলে জোর করে কিছু করানো সম্ভব নয়৷ সেক্ষেত্রে যারা এভাবেই চলতে অভ্যস্ত তাদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে৷ প্রয়োজনে শো-কজ করা হবে।”
দালালরাজ প্রসঙ্গে রুদ্রবাবু বলেন, “সর্বত্রই দালালরাজ আছে৷ কোথাও কম কোথাও বেশী৷ তবে মেডিকেলে দালালরাজ রুখতে কড়া পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে৷ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে এবিষয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ তবে দালালরাজ একেবারে নির্মূল করা সম্ভব নয়।”
দালালরাজ রোখার ক্ষেত্রে মেডিকেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ রয়েছে। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এতদিন পর্যন্ত যতজন দালাল গ্রেপ্তার হয়েছে তাদের কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ জানানো হয়নি মেডিকেল কর্তৃপক্ষের তরফে৷ তাই পুলিশ নিরুপায় হয়ে অনেকক্ষেত্রে দালালদের ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়। তবে মেডিকেল কর্তৃপক্ষের দাবি, তারা এবার দালালরাজ বন্ধে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিতে চলেছে। হাসপাতালের সুপার কৌশিক সমাজদার বলেন, “দালালরাজ রুখতে সবরকম ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ইতিমধ্যেই হাসপাতালে ৩২টি সিসি টিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আরও ১৪৪ টি ক্যামেরা বসানোর অনুমোদন মিলেছে। বিভিন্ন সময়ে পুলিশে মৌখিক অভিযোগ জানানো হয়েছিল। আগামীতে লিখিত অভিযোগ জানানো হবে।”
Be the first to comment