আদিবাসীদের জমি হস্তান্তর হবে না, বিধানসভায় ঐতিহাসিক ঘোষণা মুখ্যমন্ত্রীর

Spread the love
আদিবাসীদের সম্মান জানিয়ে বিধানসভায় যুগান্তকারী পদক্ষেপের কথা বৃহস্পতিবার ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, আদিবাসীদের জমি হস্তান্তর করা হবে না। বস্তুত, বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণা গোটা দেশকে পথ দেখাবে।
শিল্পায়নের নামে বিভিন্ন রাজ্যে আদিবাসী ভূমিপুত্রদের উৎখাত করার অভিযোগ ওঠে। বিভিন্ন অজুহাতে সামান্য অর্থের বিনিময়ে ভিটেমাটি ছাড়া হন আদিবাসীরা। এই ঘোষণায় সেই ভয়াবহ ভবিতব্য থেকে মুক্তি পেলেন আদিবাসীরা। রাজনৈতিক মহলের বক্তব্য, আদিবাসীদের জমি হস্তান্তর হবে না ঘোষণার পর ভারতে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের কাছে প্রেরণার উৎস হয়ে উঠবে পশ্চিমবঙ্গ। বাংলা ছাড়া কোনও রাজ্য এখনও আদিবাসীদের জন্য এমন সুচিন্তিত পরিকল্পনা নেয়নি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার পর আদিবাসীদের আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়নে নজর দেন। আদিবাসী উন্নয়নে বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর আমলেই মাথা উঁচু করে এগিয়ে চলার পথে আদিবাসীরা সামিল হয়েছেন। পশ্চিমবঙ্গে আদিবাসী শিক্ষার হার ঊর্ধ্বমুখী হচ্ছে। মাধ্যমিক এবং উচ্চমাধ্যমিকে সাঁওতালি ভাষায় প্রশ্নপত্র হচ্ছে। রাজ্য সরকারের নিজস্ব মুখপত্র ‘পশ্চিমবঙ্গ’ ছাপা হচ্ছে অলচিকি ভাষাতেও।
এদিন মুখ্যমন্ত্রী ঘোষণা করেন মরিচঝাঁপিতে একটি স্মৃতিসৌধ তৈরি করবে রাজ্য সরকার। ১৯৭৯ সালে সুন্দরবন অঞ্চলের মরিচঝাঁপি দ্বীপে সংগঠিত হত্যাকাণ্ড হয়। বাংলাদেশ থেকে উদ্বাস্তু হয়ে আসা শরণার্থীদের উচ্ছেদের জন্য তৎকালীন বাম সরকারের পুলিশ দ্বীপটি ঘিরে ফেলেছিল। দীর্ঘদিন অবরোধের ফলে অনাহারে এবং পুলিশের গুলিবর্ষণে দ্বীপের বহু মানুষ মৃত্যুবরণ করেন। ১৯৭৯ সালের ৩১ জানুয়ারি বাম সরকারের পুলিশ দ্বীপের মধ্যে ঢুকে উদ্বাস্তুদের উপর লাগাতার গুলিবর্ষণ শুরু করে। সেই স্মৃতি এখনও দগদগে ঘায়ের মতো কষ্ট দেয় রাজ্যবাসীকে। গণহত্যায় মৃতদের শ্রদ্ধা জানাতে এদিন স্মৃতিসৌধ গড়ার ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৃহস্পতিবার সকাল এগারোটা নাগাদ বিধানসভায় আসেন মুখ্যমন্ত্রী। বিধায়কদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরও দেন। নিজের দপ্তরের বাইরেও বিভিন্ন দপ্তরের প্রশ্ন, তথ্য ও পরিসংখ্যান সহ একাধিক প্রশ্নের উত্তর দেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। গোটা রাজ্যকে তিনি যে হাতের তালুর মত চেনেন তা আরও একবার বুঝতে পারেন বিরোধী বিধায়করা।এদিন পর্যটনমন্ত্রীকে আরও পড়াশোনা করে বিধানসভায় আসার পরামর্শ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। বনমন্ত্রীকে তিনি ধমক দেন। তিনি এদিন ঘোষণা করেন গঙ্গাসাগর, বকখালিতে পর্যটনে আরও জোর দেওয়া হবে। নবদ্বীপ, কোচবিহার, চুরুলিয়া, পলাশিকে হেরিটেজ টাউন ঘোষণা করা হবে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*