কলকাতার এক নম্বর নাগরিকের দাম্পত্য কলহ এখন আর নতুন নেই। আগে যা ছিল চুপি চুপি, মাস কয়েক আগে থেকেই তা নেমে এসেছে রাস্তায়। এ বার রাজ্যের মন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়ের করা স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলার দায়িত্বই ছেড়ে দিলেন আলিপুর জজ কোর্টের বিচারক শান্তনু মিশ্র। সোমবার দু’পক্ষই উপস্থিত ছিলেন কোর্টে। কিন্তু বিচারক মিশ্র ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে অন্য ঘরে পাঠিয়ে দেন মামলা।
এ দিনও আদালতে রাজ্যের মন্ত্রী তথা তৃণমূলের দক্ষিণ চব্বিশ পরগনা জেলা সভাপতি শোভনবাবুর সঙ্গে কোর্টে উপস্থিত ছিলেন তাঁর বান্ধবী বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়। সেখান থেকে তাঁরা বিধানসভাতেও যান। অনেকে বলছেন, বৈশাখী দেবী আগে বিধানসভায় এলেও এই প্রথম এলেন শোভনের সঙ্গে। কিন্তু সবার সামনে দিয়ে আসবেন না বলে পিছনের দরজা দিয়ে গাড়ি পার্কিং-এর সামনে চলে যান দু’জনে।
এখন প্রশ্ন হচ্ছে বিচারক শান্তনু মিশ্র কি ব্যক্তিগত কারণেই এই মামলা থেকে হাত উঠিয়ে নিলেন?
শোভনবাবুর স্ত্রী রত্না চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘উনি বলেছেন ব্যক্তিগত কারণ। উনিও তো মানুষ। উনি তো দেখছেন মেয়রকে। যে মহিলাকে নিয়ে সমস্যা, তিনিই রোজ কোর্টে এসে বসে থাকছেন।’ এ দিন রত্নাদেবী ক্ষোভ উগরে দেন শোভনের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, ‘৩০ বছরের বেশি ও রাজনীতি করছে। কোনও লজ্জা নেই! ২২ বছর ঘর করেছি। আর আগামী ২২ বছর ওকে দৌড় করাব। নিম্ন আদালতে না হলে হাইকোর্ট, সুপ্রিমকোর্ট যাব। ততদিন বৈশাখী সঙ্গে থাকে কিনা দেখব। থাকলে বুড়ো বয়সে বিয়ে করবে।’
এমনিতেই রত্নাদেবী যে শোভন বাবুকে সহজে ছাড়বেন না তা বুঝিয়ে দিয়েছিলেন গত ২৫ মে গভীর রাতে। মেয়রের গোলপার্কের এখনকার ঠিকানার দোরগোড়ায় গিয়ে ধর্না দিয়েছিলেন। মেয়ের বিদেশে যাওয়ার জন্য জরুরি কাগজপত্রে বাবা হিসেবে সই করতে চাইছিলেন না শোভন। প্রতিবাদে মাদুর পেতে বসে পড়েছিলেন রত্না। আসরে নামতে হয় রবীন্দ্র সরোবর থানার পুলিশকে। দু’দিন পরেই ছিল মহেশতলা বিধানসভার উপনির্বাচন। সেখানে প্রার্থী ছিলেন মেয়রের শ্বশুর তথা মহেশতলা পুরসভার চেয়ারম্যান দুলাল দাস। ভোট মাথায় তুলে তিনিও জামাইয়ের বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলেন, ‘এ কেমন বাবা? যে নিজের মেয়ের পড়াশোনার জন্য ফর্মে সই করে না!” প্রসঙ্গত, মেয়রের তরফে তাঁর আইনজীবীরা বুঝিয়েছিলেন, যদি তিনি ওই ফর্মে সই করেন তাহলে ডিভোর্সের মামলায় ব্যাকফুটে চলে যেতে পারেন তিনি।
Be the first to comment