পরিবর্তনের হাওয়ায় সরকারে বদল আসতেই বদলাচ্ছে রাজ্যের বহু নীতি ৷ ত্রিপুরায় ক্ষমতায় আসার আগে বিজেপি সরকারের নির্বাচনী অ্যাজেন্ডায় ছিল রাজ্যে বেকারদের জন্য চাকরি ও সরকারি কর্মচারীদের বেতনের উন্নতি ঘটাতে কেন্দ্রের সমান সমান রাজ্যেও সপ্তম কমিশন চালু ৷ ক্ষমতায় এসে নয়া বিজেপি সরকার সপ্তম কমিশনে নিয়ে উদ্যোগী হলেও অন্যদিকে সরকারের নয়া সিদ্ধান্তে মাথায় হাত ত্রিপুরার সরকারি কর্মচারীদের ৷
ত্রিপুরায় বিজেপি সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে এবার থেকে সরকারি কর্মচারীদের জন্য থাকবে কোনও স্থায়ী পিএফ ও পেনশন ৷ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ত্রিপুরার বিপ্লব দেব সরকার জানিয়েছে, পয়লা জুলাই, ২০১৮-এর পর যে সব নতুন সরকারি কর্মচারী চাকরিতে যোগ দেবেন, তাদের জন্য থাকবে না কোনও স্থায়ী পিএফ ও পেনশন ৷ তাদের জন্য চালু করা হবে ‘কন্ট্রিবিউটরি পেনশন স্কিম’ ৷
ত্রিপুরার অর্থ দফতরের জারি করা বিজ্ঞপ্তি নং: এফ বি (১)-ফিন (জি)/২০০৪ (পি-১) অনুযায়ী, কেন্দ্রের ‘কন্ট্রিবিউটরি পেনশন স্কিম’ প্রকল্পের আদলে নয়া ত্রিপুরার নতুন রাজ্য সরকারি কর্মচারীরা অবসরের পর নিয়মিত পেনশনের বদলে এককালীন নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা পাবেন ৷ সরকারের এই সিদ্ধান্তে প্রবল হতাশ রাজ্যের সরকারি কর্মচারীরা ৷
অন্যদিকে, এমন সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা হিসেবে ত্রিপুরার উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী জিষ্ণু দেববর্মা জানিয়েছেন, পেনশন খাতে বিপুল খরচ নাগরিকদের উপরই করের বোঝা বাড়াচ্ছে ৷ তাই ভবিষ্যত নাগরিকদের উপর থেকে বোঝা কমানোর উদ্দেশ্যেই এই পদক্ষেপ নিচ্ছে সরকার ৷ এই যুক্তির সমর্থনে অর্থমন্ত্রী নথি প্রকাশ করে জানান, সরকারি কর্মদের পেনশন বাবদ ২০০৬-০৭ সালে রাজ্যের খরচ ছিল ২৬৭ কোটি ৩৫ লক্ষ টাকা। ২০১৭-১৮ সালে সেই খরচ ১৬০৫ কোটি ১ লাখ টাকায় এসে দাঁড়িয়েছে।
কেন্দ্রে অটলবিহারী বাজপেয়ী সরকার ২০০৩ সালে চালু করে ‘কন্ট্রিবিউটরি পেনশন স্কিম’ ৷ ২০০৪ সালের পয়লা জানুয়ারি থেকে এই স্কিম লাগু হয় ৷ ইতিমধ্যেই অসম, হিমাচলের মতো বহু রাজ্যেই এই মডেল অনুসরণ করা হয় ৷ উল্লেখ্য, এর আগে ত্রিপুরার বাম সরকারের কাছেও এই প্রকল্প চালু করার প্রস্তাব এসেছিল ৷ সিপিআইএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং রাজ্যের প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী বাদল চৌধুরী জানিয়েছেন, রাজ্যের মানুষের স্বার্থেই সেই প্রকল্প মানেন নি বামফ্রন্ট সরকার ৷
Be the first to comment