অসমের জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ প্রক্রিয়া নিয়ে উত্তাল দেশ। বিজেপি’র বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সরব হয়েছে বিরোধী দলগুলি। তার মধ্যেই সুপ্রিম কোর্ট জানালো, জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ প্রক্রিয়াকে এক যুক্তিপূর্ণ পদ্ধতিতে শেষ করা হবে। যে তালিকা তৈরি হবে তা যেন সম্পূর্ণ স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য হয়, তার দায়িত্ব নিতে হবে কেন্দ্র সরকারকে।
বিচারপতি রঞ্জন গগৈ ও আর.এফ নরিমানের ডিভিশন বেঞ্চ মঙ্গলবার এই সংক্রান্ত এক শুনানিতে জানান, অসমের জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ প্রক্রিয়া চলবে, তবে সোমবার প্রকাশিত প্রথম খসড়া তালিকায় যে ৪০ লক্ষ লোকের নাম নেই তাঁদের এখনই কোথাও চলে যেতে বলা হচ্ছে না। জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণের দায়িত্বে থাকা প্রতীক হাজেলা এ দিন সুপ্রিম কোর্টে জানান, ৪০ লক্ষ ৭ হাজার লোকের নাম নেই খসড়া তালিকায়। তাঁদের মধ্যে ৩৭ লক্ষ ৫৯ হাজার লোকের নাম বাতিল করা হয়েছে ও ২ লক্ষ ৪৮ হাজার লোকের নাম আপাতত তালিকাভুক্ত করা হয়নি।
অ্যাটর্নি জেনারেল কে.কে বেনুগোপাল এ দিন সুপ্রিম কোর্টে জানান, এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট দফতর শিগগির একটি নির্দেশিকা জারি করবে যার মাধ্যমে তালিকায় নাম না থাকা লোকেরা আবেদন জানাতে পারবেন। কিন্তু তার আগে তিনি সুপ্রিম কোর্টের কাছে আবেদন করেন, কোর্টের তরফে যেন তালিকায় নাম না থাকা লোকেদের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয় যে খসড়া তালিকার ভিত্তিতে কোনও পদক্ষেপ নেওয়া হবে না।
এর পরিপ্রেক্ষিতে ডিভিশন বেঞ্চ জানান, তাঁরা কোনও প্রতিশ্রুতি দিতে পারবেন না। তবে এই নির্দেশ সংশ্লিষ্ট দফতরকে দিতে পারবেন যে খসড়া তালিকার উপর ভিত্তি করে যাতে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়া হয়, সে ব্যাপারে তাঁরা খেয়াল রাখবেন। জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণ প্রক্রিয়ার ফলে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মনে যাতে ভয়ের সঞ্চার না হয় সেদিকে খেয়াল রেখে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, নাম না থাকা ব্যক্তিরা যাতে পুনরায় আবেদন করতে পারেন এবং পুরো প্রক্রিয়া যাতে স্বচ্ছতা বজায় রেখে করা সম্ভব হয়, সেদিকে খেয়াল রাখবেন তাঁরা।
এই পুরো প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করতে কত সময় লাগতে পারে? এই ব্যাপারে সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়, সেটা নির্ভর করছে কত সংখ্যক আবেদন আসছে তার উপর। যদিও সুপ্রিম কোর্টের তরফে কেন্দ্র সরকারকে নির্দেশ দেওয়া হয়, তালিকায় নাম না থাকা ব্যক্তিরা কী পদ্ধতিতে আবেদন জানাতে পারবেন তার খসড়া ১৬ আগস্টের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে পেশ করতে হবে।
এছাড়াও জাতীয় নাগরিক পঞ্জিকরণের প্রাথমিক খসড়া তালিকা ৭ আগস্ট থেকে স্থানীয় রেজিস্ট্রার অফিসে টাঙিয়ে দিতে হবে। যাতে সেখান থেকে লোকেরা নিজেদের নাম মিলিয়ে দেখে নিতে পারেন। এই খসড়া তালিকার বিরুদ্ধে কেউ আবেদন করতে চাইলে তাঁকে ৩০ আগস্ট থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর এই ৩০ দিনের মধ্যে স্থানীয় রেজিস্ট্রার অফিসে প্রয়োজনীয় নথি জমা দিতে হবে বলে সুপ্রিম কোর্টের তরফে জানানো হয়েছে।
Be the first to comment