আমলাশোলের ছায়া শালবনীতে, প্রশাসন পাশে দাঁড়ালো আদিবাসী পরিবারের

Spread the love

জঙ্গলমহলের দীন ভূমিজ দের গ্রাম শালবনী ১০ নং কর্নগড় অঞ্চলের বুড়িশোল গ্রাম৷ হয়তো আবার একটা আমলাশোল হিসাবে খবরের শিরোনামে আসত। কিন্তু হলো না স্থানীয় মানুষজনকে নিয়ে পশ্চিম মেদিনীপুর যুব তৃনমূলের সাধারন সম্পাদক সন্দীপ সিংহের ব্যক্তিগত উদ্যোগে। এ ঘটনা সত্যিই হৃদয়স্পর্শী এবং আজও আমরা মানুষ তার পরিচয় পাই।এই অবক্ষয়ের মধ্যে আলোর কারিগর ক্ষমতার মধ্যে থেকেও মানবিক যুবনেতা সন্দীপ সিংহ  এবং নিশঃব্দে পরিবারের পাশে থেকে দীর্ঘদিন যোগ্য সঙ্গত করে চলেছেন বুড়ীশোল প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অভিজিত ঘোষ।

গতকাল রাত্রে সন্দীপ বাবু ফোন পান বুড়ীশোলের ভূমিজ আদিবাসী যামিনী ভূঁইয়ার পরিবার বিগত কয়েকদিন অনাহারে। তিনি দ্রুত স্থানীয় হারাধন দুয়ারী কে উনার বাড়িতে পাঠিয়ে রাতের খাবারের ব্যবস্থা করেন। সকাল হতেই মৃনাল কোয়াড়ী, ভোম্বল ঘোষ এবং হারাধন কে সঙ্গে নিয়ে উনার বাড়ি পৌঁছান৷ তারপরের ঘটনা পরিবারের জন্য সদর্থক হলেও এই আদিবাসী পরিবারের ইতিহাস হৃদয়স্পর্শী।স্বামী পরিত্যক্তা যামিনী ভূঁইয়া র দুই মেয়ে এবং এক ছেলে। ছোটো ছেলে পিন্টু ভূঁইয়া টিউবারকিলোসিসে আক্রান্ত। দুই মেয়ে প্রতিমা ভূঁইয়া ও কৃষ্না ভূঁইয়া মূক, বধির মানসিক প্রতিবন্ধী। সমাজের ক্রূরতা এই মূক ও বধির প্রতিমা কে দুইবার দুই পুত্র সন্তানের জননী করেছে কিন্তু পিতৃপরিচয় দেয়নি। ঈশ্বরের আর্শীবাদে অনাহারক্লিষ্ট এই ৩,৪ বছরের দুটি ছেলেই সুস্থ। 

জঙ্গলমহলে মানবিক মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জীর প্রকল্পে ২ টাকা করে সপ্তাহান্তে মোট ১০ কেজি চাল পাওয়ার কথা এই পরিবারের। কিন্তু মদ্যপ যামিনী ভূঁইয়া রেশন কার্ড বন্ধক দিয়ে মদের খরচা জোগাড় করেছেন৷ সচেতনতার অভাবে ও এলাকার কিছু মানুষের জন্য পরিবারটি অনাহারক্লিষ্ট। ভারপ্রাপ্ত শিক্ষক অভিজিত ঘোষ নিজের বিদ্যালয়ের মিড ডে মিল থেকে দীর্ঘদিন যাবত নিজে যেয়ে দিয়ে আসেন এই পরিবারের খাবার। বিদ্যালয় বন্ধ থাকলে জোটে না খাবার পরিবারটির।আজ সকালে সন্দীপ বাবু, অভিজিত স্যারকে সাথে নিয়ে পরিবারের পাশে দাঁড়ান। বাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়ার ত্রিপল দিয়ে আপাতত হারাধন বাবু ছাউনি দিয়েছেন এবং অঞ্চল থেকে ত্রানসামগ্রী দিয়ে এসেছেন। পরিবারের মদ খাওয়ার প্রবনতার জন্য খাদ্য সামগ্রী বেশি দেওয়া হয়েছে নগদ অর্থের তুলনায়।

সন্দীপ সিংহ এলাকায় যারা রেশন কার্ড বন্ধক রাখে তাদের বাড়ি যেয়ে নিষেধ করেছেন এই অনৈতিক কাজ করতে এবং রেশন ডিলার কে জানানো হয়েছে যামিনী ভূঁইয়ার রেশন যেন অন্য কেউ না তোলে। শালবনী পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নেপাল সিংহ এবং বিডিও পুষ্পল সরকারকে পুরো ব্যাপারটি অবহিত করা হয়। ডিজাস্টার কিট আজকেই পৌঁছে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং যে কোনো ফান্ড থেকে দরকারে নিজস্ব ফান্ড থেকে একমাসের মধ্যে নতুন বাড়ি দেওয়ার বা সম্পূর্ণ রিপেয়ারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। আই সি বিশ্বজীত বাবু এলাকায় বেআইনি মদের দোকানগুলি বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেবেন বলে জানিয়েছেন। শিক্ষক অভিজিত ঘোষ ও এলাকার গ্রামবাসীদের এই পরিবারের প্রতি দৃষ্টি রাখতে সন্দীপ বাবু অনুরোধ করেন। যামিনী ভূঁইয়া র দুই মেয়ে যাতে প্রতিবন্ধী কার্ড করানো যায় এবং মমতা ব্যানার্জীর মানবিক প্রকল্পে তাদের সাহায্য করা যায় তার জন্য সন্দীপ সিংহ বিশেষ উদ্যোগ নেবেন বলে জানান। 

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*