জেলায় জেলায় শিশুদের অধিকার রক্ষায় নানা কাজ করে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি। উদ্ধার হওয়া ছেলেমেয়েদের ক্ষেত্রেও তার ভবিষ্যৎ নির্ধারণে নানা নির্দেশিকা দেয়। নিয়ম অনুযায়ী, প্রতিটি জেলায় একটি করে এই কমিটি থাকার কথা। কিন্তু, বর্তমানে রাজ্যের মাত্র দুটি জেলায় রয়েছে। বাকি জেলাগুলিতে নতুন কমিটি গঠন না হওয়ায় উদ্ধার হওয়া শিশুদের নিয়ে নানা সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বিভিন্ন হোম ও চাইল্ড লাইন সহ অন্য স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে।
দীর্ঘদিন ধরেই অধিকাংশ জেলায় মেয়াদ ফুরিয়েছে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির। রাজ্যের চার জেলা আলিপুরদুয়ার, মুর্শিদাবাদ, জলপাইগুড়ি ও মালদায় খালি কাজ করত এই কমিটি। মঙ্গলবার মেয়াদ ফুরিয়েছে জলপাইগুড়ি ও মালদা জেলা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির। নিয়ম অনুযায়ী শিশু উদ্ধারের ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিজ জেলায় অথবা নিকটবর্তী জেলার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির সামনে শিশুদের হাজির করতে হয়। ফলে অধিকাংশ জেলায় এই কমিটি না থাকায় উদ্ধার হওয়া শিশুদের নিয়ে ছুটতে হচ্ছে দূরের জেলায়।
স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির অভিযোগ, আইন মানতে হলে দুই মেদিনীপুরে কোনও বাচ্চা উদ্ধার হলে তাকে নিয়ে মুর্শিদাবাদ যেতে হবে। কলকাতা থেকেও ছুটতে হবে মুর্শিদাবাদ। উত্তরবঙ্গের কোনও জেলায় শিশু উদ্ধার হলে নতুন করে জেলায় জেলায় কমিটি না হওয়া পর্যন্ত ছুটতে হবে আলিপুরদুয়ারে। ফলে বাস্তবে এই কাজ সমস্যার এবং সময়সাপেক্ষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নিয়ম অনুযায়ী ৩ বছরের জন্য ৫ সদস্য বিশিষ্ট এই কমিটি তৈরি করা হয়। এতদিন জেলাস্তরেই এই কমিটি গঠন করা হত। কিন্তু এখন কমিটির সদস্যদের অনুমোদন দেয় রাজ্য শিশু সুরক্ষা কমিশন। ফলে প্রতিটি জেলায় নতুন কমিটি গড়তে কিছুটা সময় লাগছে। এর আগে দুবার এনিয়ে আবেদনপত্র চেয়ে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এখনও প্রতিটি জেলায় কমিটির সদস্যদের নির্বাচন করার কাজ সম্পন্ন করা যায়নি। এর জেরেই জটিলতা দেখা দিয়েছে। এদিকে একে একে মেয়াদ ফুরিয়েছে জেলায় জেলায় থাকা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি গুলির।
যদিও চাইল্ড লাইন ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ও হোমগুলির দাবি, বাস্তবে উদ্ধার হওয়া শিশুদের স্বশরীরে হাজির না করালে এনিয়ে জটিলতা দেখা দিতেই পারে। এর আগে জলপাইগুড়ির হোমকাণ্ডে এই ধরনের নানা অনিয়ম সামনে এসেছিল।
Be the first to comment