পর্যটন সংক্রান্ত একটি মামলায় শুক্রবার রাজ্য সরকারকে ভর্ৎসনা করল হাইকোর্ট।
শুক্রবার দৈনিক তালিকায় এই মামলাটি না থাকা সত্ত্বেও রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল কিশোর দত্ত মামলার বিষয়ে বক্তব্য পেশ করতে গেলে বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের ডিভিশন বেঞ্চ উষ্মা প্রকাশ করে জানিয়ে দেন সোমবারেই মামলার শুনানি হবে। সেদিন রাজ্যের বক্তব্যে সন্তুষ্ট না হলে মঙ্গলবার মুখ্য সচিবকে সশরীরে আদালতে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দেন ডিভিশন বেঞ্চ।
২০১৪ সালে চা বাগান কতৃর্পক্ষের করা এই মামলায় বৃহস্পতিবার রাজ্যের মুখ্যসচিব মলয় দেকে সশরীরে হাজিরার নির্দেশ দিয়েছিলেন বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দারের ডিভিশন বেঞ্চ। এ দিন আদালতের সেই নির্দেশকে পুনর্বিবেচনা করে দেখার আবেদন জানান এজি। তখনই ক্ষুব্ধ বিচারপতি এজিকে প্রশ্ন করেন ২০১৬ সালের আদালতের নির্দেশ কেন অমান্য করা হয়েছে ? সোমবার এর উত্তর দিতে হবে এজিকে। রাজ্যের ব্যাখ্যায় আদালত সন্তুষ্ট না হলে মঙ্গলবার সশরীরে উপস্থিত হতে হবে মুখ্য সচিবকে।
এখানেই থামেননি বিচারপতি বিশ্বনাথ সমাদ্দার। তিনি বলেন, “রাজ্যের আমলারা কী মনে করেন! হাইকোর্টের বিচারপতিরা তাঁদের হাতের পুতুল? আপনারা (আমলারা) কী ভাবে রাজ্য চালাচ্ছেন?”
মামলার বয়ান অনুয়াযী ২০০৭ সালে দার্জিলিংয়ের কাঞ্চন ভিউ টি এস্টেট স্থানীয় জেলাশাসক ও ট্যুরিজম বিভাগে তাদের জমিতে পর্যটকদের টি ট্যুরিজম করাতে চেয়ে আবেদন জানায়। দুই দফতর সেই আবেদন মঞ্জুর করে। ২০১২ সালে জিটিএ গঠনের পর তৎকালীন জিটিএ প্রধান বিমল গুরুং এই প্রকল্পের বিরোধিতা করেন। ২০১৪ সালে টি ট্যুরিজমের জন্য অনুমতি চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন চা বাগান কতৃর্পক্ষ। বিচারপতি অনিরুদ্ধ বসুর সিঙ্গল বেঞ্চ এই মামলার রায়ে চা বাগান কতৃর্পক্ষকে ৬ সপ্তাহের মধ্যে জিটিএ-র দপ্তরে আবেদন জানাতে এবং তার ২ সপ্তাহ পর জিটিএকে আবেদনের পুর্নবিবেচনা করে আদালতকে জানাতে নির্দেশ দেয়। ২০১৬ সালে সিঙ্গল বেঞ্চের এই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে রাজ্য সরকার ৩৪৯ দিন পর তৎকালীন প্রধান বিচারপতি মঞ্জুলা চেল্লুরের ডিভিশন বেঞ্চে মামলা করে। রাজ্যের মামলা দায়ের করতে ৩০ দিনের বদলে এত দেরি হল কেন, এর উত্তর হলফনামা দিয়ে জানাতে নির্দেশ দেয় আদালত। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে রাজ্য সেই হলফনামা বিচারপতি সমাদ্দারের এজলাসে পেশ করলে ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের মুখ্য সচিবকে সশরীরে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন।
সব মিলিয়ে পরিস্থিতি এখন খুবই জটিল। সোমবার এজি-র বক্তব্যে আদালত সন্তুষ্ট না হলে মুখ্য সচিবকেই আদালতে যেতে হতে পারে।
Be the first to comment