গত দেড় দশক ধরে উত্তরপ্রদেশের রায়বরেলী লোকসভার সাংসদ তিনি। তারও আগে ছিলেন উত্তরপ্রদেশের অমেঠী লোকসভার সাংসদ। কিন্তু সত্তরোর্ধ সনিয়া গান্ধী আগামী লোকসভা ভোটে প্রার্থী না-ও হতে পারেন রায়বরেলী থেকে।
তা হলে কে প্রার্থী হবেন সেখানে?
কংগ্রেস শীর্ষ সূত্রে শুক্রবার বলা হয়েছে, সনিয়া প্রার্থী না হলে রায়বরেলীতে প্রার্থী হতে পারেন মেয়ে প্রিয়াঙ্কা বঢড়া। তবে মা প্রার্থী হবেন না মেয়ে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।
রাহুল ঘনিষ্ঠ কংগ্রেসের ওই সূত্রের বক্তব্য, সনিয়া গান্ধীর বয়স এখন ৭২ বছর। লোকসভা ভোটের আগে তাঁর বয়স ৭৩ পূর্ণ হয়ে যাবে। এমনিতে সনিয়ার শরীরও যে খুব ভাল যাচ্ছে তা নয়। এই যেমন কদিন আগে জ্বরও হয়েছিল। রায়বরেলীতে ফের প্রার্থী হলে তাঁর পক্ষে প্রচার-দৌড়ঝাঁপ করা মুশকিল। দলের ওই নেতার কথায়, তা বলে সনিয়া রাজনীতিতে সক্রিয় থাকবেন না এমন নয়। কংগ্রেস সভানেত্রী পদ থেকে সরে গেলেও রাহুলের নেতৃত্বে দলের ওয়ার্কিং কমিটির সদস্য তিনি। বিরোধী দলের অন্য নেতাদের সঙ্গে তিনি নিয়মিত যোগাযোগ রাখেন। এবং উনিশের ভোটের আগে বিজেপি-বিরোধী জোট গঠনের ক্ষেত্রে তাঁর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকবে।
বাস্তবে রায়বরেলী থেকে সনিয়া সাংসদ হলেও উত্তরপ্রদেশের এই লোকসভা কেন্দ্রটি মূলত দেখভাল করেন প্রিয়ঙ্কাই। তিনি আকছার সেখানে যান। রায়বরেলীর স্থানীয় কংগ্রেস নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এলাকার নেতারা দরকারে অদরকারে প্রিয়াঙ্কার সঙ্গেই যোগাযোগ রাখেন। তা ছাড়া ২০০৯ ও ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে রায়বরেলীতে নির্বাচনী প্রচারের রাশও ছিল প্রিয়াঙ্কারই হাতে।
কংগ্রেসে জনার্দন দ্বিবেদীর মতো বর্ষীয়ান নেতারা বলেন, এমনিতেই প্রিয়াঙ্কার মধ্যে অনেকেই ইন্দিরা গান্ধীর ছায়া দেখতে পান। আসলে রাজীবও তাঁর মেয়ের মধ্যে রাজনৈতিক সম্ভাবনা দেখেছিলেন। প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী চেয়েছিলেন তাঁর মেয়ে তাঁর উত্তরসূরি হয়ে উঠুক।
কিন্তু মা-ভাইয়ের লোকসভা কেন্দ্র দেখভাল করলেও প্রিয়াঙ্কা তার পর আর এগোননি। রাহুলকেও এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসা করলে বারবার বলেছেন, ওঁর ভালমন্দের সিদ্ধান্ত ও নেবে। তা ছাড়া অনেকে মনে করেন, প্রিয়াঙ্কা রাজনীতিতে এলে হয়তো রাহুল ঢাকা পড়ে যাবেন। কিন্তু একই সঙ্গে এ-ও সত্যি অমেঠির মতই রায়বরেলীর সঙ্গে গান্ধী পরিবার এখন প্রায় ওতপ্রোত ভাবে জুড়ে গিয়েছে। সনিয়া প্রার্থী না হলে প্রিয়াঙ্কা প্রার্থী করা ছাড়া আর তাই কোনও বিকল্প থাকবে না।
Be the first to comment