পাথর খাদানে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে মৃত্যু হল অন্তত দশ’জন খাদান শ্রমিকের। শুক্রবার রাতে অন্ধ্রপ্রদেশের কুরনুল জেলার আলুরু এলাকার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
স্থানীয় সূত্রের খবর, জিলেটিন স্টিক দিয়ে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে ভাঙা হচ্ছিল গ্রানাইট পাথরের ওই খাদানটি। হঠাৎই বড় বিস্ফোরণ ঘটে যায়, ধসে পড়ে পাথরের দেওয়াল। চাপা পড়েন বেশ কয়েক জন শ্রমিক। এখনও পর্যন্ত পাঁচ জনের দেহ উদ্ধার করা গিয়েছে।
এলাকার পুলিশ সুপার জি গোপিনাথ জানিয়েছেন, মৃত শ্রমিকেরা সকলেই বিহার, ওড়িশা ও ঝাড়খন্ড থেকে কাজ করতে এসেছিলেন। ঘটনার সময় ওই এলাকার হাত্তিবালেগাল গ্রামের একটি খাদান থেকে পাথর ভেঙে ট্রাকে তুলছিলেন তাঁরা। এক জায়গায় জড়ো করে রাখা ছিল বিস্ফোরক জিলেটিন স্টিকগুলো। দুর্ঘটনাবশত একসঙ্গে ফেটে গিয়ে বিশাল বিস্ফোরণ হয় রাতে। গোপীনাথ বলেন, “এখনও পাঁচটা দেহ বার করা গিয়েছে। ছ’জনকে আহত অবস্থায় হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।বাকিদের এখনও উদ্ধার করা যায়নি।”
তবে স্থানীয়রা বলছেন, শুধু খাদানের শ্রমিকই নয়, সংলগ্ন গ্রামবাসীদের মধ্যেও কারও কারও অবস্থা বেশ খারাপ। খাদানটি দু’টি গ্রামের মাঝামাঝি অবস্থিত। বিস্ফোরণের শব্দ প্রায় ৪০ কিলোমিটার দূর পর্যন্ত শোনা গিয়েছে। আশপাশের গ্রাম থেকে অনেকে পালিয়েছেন। যাঁরা পালাতে পারেননি, তাঁদের অবস্থা এখনই জানা যাচ্ছে না।
আলুরুর বিধায়ক জি জয়ারাম বলেন, “অন্তত ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে মনে হচ্ছে।” মৃতদের পরিবার পিছু ২৫ লাখ টাকা করে এবং আহতদের পরিবার পিছু ১০ লাখ টাকা করে ক্ষতিপূরণ চেয়ে কর্ণাটক সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন এই বিরোধী দলনেতা। তাঁর অভিযোগ, জনবসতির এথ কাছে অবস্থিত এই খাদান বন্ধ করার জন্য অনেক বার জানানো হয়েছে কর্তৃপক্ষকে। কিন্তু কর্ণপাত করেনি কেউ।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানাচ্ছেন, বিস্ফোরণের সময় বিশাল বড় বড় বোল্ডার ছিটকে ওঠে খাদান থেকে, এবং শ্রমিকদের গায়ে এলোপাথাড়ি পড়ে। ভেঙে যায় দেওয়ালও। ৩০ জন শ্রমিক সেই সময় খাদানের ভিতরে ছিলেন। ১৫ জন ছিলেন এদিক ওদিক ছড়িয়ে ছিটিয়ে। তিনটি বড় ট্রাক গুঁড়িয়ে যায়। বিস্ফোরণের সঙ্গে সঙ্গে আগুন জ্বলে ওঠে ঘটনাস্থলে। পরে সেই আগুন নেভাতে রীতিমতো বেগ পেতে হয় দমকলকর্মীদের। আগুন নিভলে উদ্ধারকারী দল পাঁচটি দগ্ধ দেহ উদ্ধার করে। কাউকেই চেনা যাচ্ছিল না।
মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নায়ডু ঘটনায় দুঃখপ্রকাশ করে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। জখম শ্রমিকদের চিকিৎসাও দ্রুত করার কথা বলেছেন তিনি।
Be the first to comment