এবার গ্রাহকের সচেতনতায় এড়ানো গেল এটিএম জালিয়াতি। দক্ষিণ কলকাতার কসবার একটি এটিএমে টাকা তুলতে গিয়ে চারপাশ ভাল করে খুঁটিয়ে দেখেন এক যুবক। আর তখনই তাঁর চোখে পড়ে, এটিএমে পিন নম্বর দেওয়ার জায়গার ঠিক ওপরে লাগানো রয়েছে একটি স্কিমার যন্ত্র!
রবিবার ইন্ডাসইন্ড ব্যাঙ্কের এটিএমটি থেকে ওই যুবকের ঠিক আগেই টাকা তুলেছিলেন এক ব্যক্তি। ঘটনাচক্রে তিনি তখনও এটিএমের বাইরেই ছিলেন। সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে ডেকে এটিএম কার্ডের পিন বদলাতে বলেন ওই সচেতন যুবক। পুলিশে খবরও দেন। স্কিমারটি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ এসে। খবর ছড়িয়ে পড়ার পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের অনেকেই এটিএমে ছোটেন পিন বদলাতে। কারণ তাঁরা কয়েক দিনের মধ্যেই ওই এটিএম থেকে টাকা তুলেছিলেন।
শহর জুড়ে ছড়িয়ে পড়া এটিএম জালিয়াতি–কাণ্ডে গ্রেফতার হয়েছে আরও দুই রোমানীয় প্রতারক। তারাই চক্রের মূল পান্ডা বলে জানিয়েছে পুলিশ। তদন্তে জানা গেছে, স্কিমিং করে ব্যাঙ্কের গ্রাহকদের তথ্য চুরির কারবার দীর্ঘদিন ধরে চালাচ্ছে ওই চক্রটি। কিন্তু টাকা তুলত না তারা। কেবল তথ্য চুরির কাজ হাসিলের পরে চুরি করা তথ্য আবার তারা নিলাম করে বেচে দিত নাইজেরীয় বা অন্য দুষ্কৃতীদের কাছে। ধরা পড়লে তারাই পড়ত।
কিন্তু সম্প্রতি নিজেরাই টাকা তুলতে শুরু করে ওই রোমানীয় চক্রটি। এর পরেই দেশের বিভিন্ন জায়গায় একের পর এক রোমানীয় দুষ্কৃতী ধরা পড়তে থাকে। তাদের জেরা করে জানা যায়. টিকু বোগদান কস্টিনেল এবং পুইসা ইউজিন মারিয়ান নামের দুই রোমানীয় ভারতের বিভিন্ন শহরে স্কিমিংয়ের মাস্টারমাইন্ড। দেশের কোন শহরে এটিএম কার্ডের মাধ্যমে কত লেনদেন হয়, সে সম্বন্ধে গবেষণা করে তারা। তার পরে জালিয়াতি করার জন্য নির্দিষ্ট শহর বাছা হয়। তার পরে বিভিন্ন অরক্ষিত এটিএমে লাগায় স্কিমার।
ব্যস, এর পরে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে উঠতে থাকত টাকা। পুলিশ জানিয়েছে, এরা এই কাজে এতটাই দক্ষ যে, মিনিট দুয়েকের মধ্যে যে কোনও এটিএমে স্কিমার লাগিয়ে ফেলতে পারে। শহর জুড়ে এটিএম জালিয়াতির অভিযোগ ওঠার পরে মো ৩০০টি কার্ড ব্লক করার নির্দেশ দিয়েছে পুলিশ। উদ্যোগী হয়েছে শহরের সমস্ত এটিএমে নিরাপত্তরক্ষী নিয়োগ করার ব্যাপারেও।
Be the first to comment