বিষাক্ত ধান খেয়ে মৃত ৪৩টি ময়ূর। তামিলনাড়ুর মাদুরাইয়ের এই ঘটনায় তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক বিতর্কও। রবিবার মাদুরাইয়ের মারুথাকুলাম গ্রামের রাস্তায় হঠাৎ ৩৪টি ময়ূর এবং ৯টি ময়ূরীর দেহ পড়ে থাকতে দেখেন গ্রামবাসীরা ওই গ্রামে প্রায়ই ময়ূর আসত। এতগুলো ময়ূরের মৃতদেহ দেখে গ্রামবাসীরা পুলিশে খবর দেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে খবর দেয় বন দফতরে। মৃত ময়ূরগুলির ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখে রেঞ্জ অফিসার জানান, বিষ মেশানো ধান খেয়েছিল পাখিগুলি। তবে ঠিক কী বিষ মেশানো ছিল, কেনই বা মেশানো ছিল, তা জানা যায়নি এখনও।
রেঞ্জ অফিসার আরও বলেন, “যে হেতু ময়ূর বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইনের আওতাধীন, সে হেতু অপরাধ প্রমাণিত হলে তিন থেকে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড হতে পারে অভিযুক্তের।” গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন, ওই গ্রাম এবং সংলগ্ন এলাকায় কোনও চাষের জমি নেই, যে সেখান থেকে কীটনাশক মেশানো ধান আসবে। কিন্তু ময়ূরগুলি যেখানে মরে পড়েছিল, তার চার পাশে অনেক ধান ছড়ানো ছিল
গ্রামবাসীরা জানান, গত কয়েক বছর ধরেই তাঁদের গ্রামে প্রায় শ’খানেক ময়ূর–ময়ূরী আসত। তাঁরাই ময়ূরগুলিকে ধান, চাল, গম– এই সব দানাশস্য খেতে দিতেন। পুলিসের প্রাথমিক অনুমান, ময়ূর হত্যার জন্য ওই সুযোগটাই কেউ নিয়েছে। তবে কেন এতগুলি পাখি মারা হল, তা জানতে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এই ঘটনায় বিতর্ক ছড়িয়ে মাদুরাই জুড়ে। অভিযোগ উঠেছে, গোরক্ষকদের দাপটে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নিরীহ মানুষের মৃত্যু হচ্ছে একের পর এক। গরুকে মাতা বলে ঘোষণা করা হয়েছে। গোহত্যাকারীদের মৃত্যুদণ্ডের দাবিও তুলেছেন বহু বিজেপি নেতা। আর সেই দেশেই এতগুলি জাতীয় পাখির এ ভাবে মৃত্যুতে বিজেপি নেতারা চুপ!।
তামিলনাড়ুতে বিজেপির শরিক দল এআইডিএমকে। গোহত্যা নিয়ে সরব বিজেপি নেতাদের কাউকে মাদুরাইয়ে এই ময়ূর হত্যা নিয়ে মুখ খুলতে এখনও শোনা যায়নি। সরকারের তরফেও শুধু তদন্তের আশ্বাস ছাড়া আর কিছু দেওয়া হয়নি। মাদুরাইয়ের এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে বিভিন্ন পশুপ্রেমী সংগঠন। জাতীয় পাখির সুরক্ষার দাবি জানিয়েছে তারা।
Be the first to comment