প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসকেই হিন্দু হস্টেল বলে ঘোষণা করলেন সেখানকার পড়ুয়ারা! ক্যাম্পাসে ঢোকার মুখে ফুল দিয়ে লেখা হয়েছে ‘হিন্দু হস্টেলে স্বাগত’। চলছে গান-কবিতা-বাজনা। আপাতত এভাবেই চলছে বিক্ষোভ প্রতিবাদ।
দাবি একটাই, পড়ুয়াদের জন্য চাই হস্টেল। তিন বছর আগে সংস্কারের জন্য বন্ধ হয় হিন্দু হস্টেল। কথা ছিল এ বছরের জুলাইয়ে তা খোলা হবে। কিন্তু অগাস্টে কর্তৃপক্ষ বলেন, আরও পাঁচ মাস লাগবে। এর পরেই খেপে যান পড়ুয়ারা। শুরু করেন অবস্থান বিক্ষোভ। সোমবার অবশ্য হস্টেল মেরামতিতে দেরির দায় নিজের কাঁধে নিয়ে প্রকাশ্যে ক্ষমা চেয়েছেন সেখানকার উপাচার্য অনুরাধা লোহিয়া।
অনুরাধাদেবী বলেন, ‘‘হিন্দু হস্টেলের কাজে দেরি হয়েছে। যা ত্রুটি হয়েছে, তার দায়িত্ব আমি নিচ্ছি। ক্ষমাও চাইছি। হস্টেল ফের চালু করার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা চালাচ্ছি। সকলে আমাদের সাহায্য করুক।’’ তবে সরকারি বিধির জটকেও এই দেরির অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করে আর কয়েকটা মাস সময় চেয়েছেন তিনি। আর কয়েকটা মাস সময় চেয়েছেন উপাচার্য।
এতে অবশ্য নিজেদের অবস্থান থেকে একটুও সরেননি পড়ুয়ারা। তাঁদের দাবি, হিন্দু হস্টেলের যে-অংশ মেরামত করা হয়েছে, সেখানে তাঁদের থাকতে দেওয়া হোক। কর্তৃপক্ষ অবশ্য জানিয়েছেন, হিন্দু হস্টেল বিপন্মুক্ত বলে পূর্ত দফতর লিখিত ভাবে জানানোর আগে তা চালু করা যাবে না।
সূত্রের খবর, আপাতত হস্টেলের এক ও দু’নম্বর ওয়ার্ড মেরামত করা হয়েছে। মেঝে সারানো হয়েছে। কিন্তু বিদ্যুৎ পরিষেবা ও শৌচালয়ের কাজ শেষ হয়নি। দোতলার ছাদ থেকেও কোনও কোনও জায়গায় জল পড়ছে। তিন, চার ও পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের দেওয়ালে সিমেন্টের প্রলেপ পড়েছে। রান্নাঘরের উপরের অংশ অবশ্য ভাঙা। কাঠের সিঁড়িগুলিরও অবস্থা খারাপ। ছ’নম্বর ওয়ার্ডের কাজ চললেও কার্নিস ভেঙে ঝুলছে! হস্টেলের মাঠও ভরে রয়েছে জঙ্গলে। ফলে এই অবস্থায় হস্টেলে পড়ুয়াদের থাকা সম্ভব নয় বলেই জানাচ্ছেন কর্তৃপক্ষ।
অনেকেই বলছেন, শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদের যে এখনও দাম আছে, তা বারবার দেখাচ্ছে ছাত্রসমাজ। যাদবপুরের পরে মেডিক্যাল কলেজে মাথা নত করেছেন কর্তৃপক্ষ। এই বার অনুরাধা লোহিয়ার মতো কড়া উপাচার্যও হাত জোড় করলেন পড়ুয়াদের সামনে।
Be the first to comment