ভোটাভুটিতে স্বস্তিজনক ব্যবধানে জিতে রাজ্যসভায় ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচিত হলেন এনডিএ প্রার্থী তথা সংযুক্ত জনতা দলের সাংসদ হরিবংশ নারায়ণ সিংহ। এবং তা নিশ্চিত হওয়া মাত্রই রাজ্যসভায় ধন্যবাদ প্রস্তাবে বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বলে উঠলেন, “আমরা সবাই এখন হরির ভরসায়!”
এমনিতে সংসদে এখন সরকার-বিরোধী যে শঠে শাঠ্যং চলছে তাতে হাসি, মজার ব্যাপারটা শিকেয় উঠেছে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রীর এ কথা শুনে এ দিন বিরোধীরাও এক গাল হেসে ফেলেন।
অতীতে দীর্ঘ কয়েক দশক সাংবাদিকতা করেছেন হরিবংশ। ঝাড়খণ্ড থেকে প্রকাশিত হিন্দি দৈনিক প্রভাত খবরের সম্পাদক ছিলেন তিনি। তাঁর ভূয়সী প্রশংসা করতে গিয়ে মোদী বলেন, “ওঁর লেখায় ধার রয়েছে। এক সময়ে প্রয়াত প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখরের সঙ্গে ওঁর ভাল সম্পর্ক ছিল। হরিবংশ জানতেন, প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে তিনি ইস্তফা দেবেন। কিন্তু চন্দ্রশেখরকে দেওয়া কথা রেখেছিলেন। নিজের সংবাদপত্রেও সে খবর লেখেননি।”
বস্তুত সংসদে এমন কিছু কিছু সময় আসে যখন বিরোধী-শাসক ভেদাভেদ প্রায় মুছে যায়। যেমন লোকসভায় স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকার নির্বাচনের পর ধন্যবাদ প্রস্তাব বা রাজ্যসভায় চেয়ারম্যান, ডেপুটি চেয়ারম্যানকে ধন্যবাদ প্রস্তাবে বিতর্ক। ট্রেজারি ও বিরোধী বেঞ্চের সাংসদরা তখন পাল্লা দিয়ে স্পিকার বা ডেপুটি স্পিকারের প্রশংসা করেন।
এ দিনও তাই হলো। বিরোধী দলনেতা গুলাম নবি আজাদ বলেন, নতুন ডেপুটি স্পিকার নিশ্চয়ই বুঝবেন বিরোধী বেঞ্চের আরও পুষ্টির দরকার রয়েছে। তাই তাঁর বিশেষ নজর দরকার এ দিকে। গুলামের এ কথায় হেসে ওঠেন বিরোধীরা।
একই ভাবে স্বভাব সুলভ ভাবে বক্তৃতার মাঝে মজার উপাদান দেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অরুণ জেটলি। তিনি বলেন, “ডেপুটি চেয়ারম্যান শাসক দলের ভোটে নির্বাচিত হলেন। অথচ পরিহাসের বিষয়, “ডেপুটি চেয়ারম্যানকে সব সময় বসতে হয় বিরোধী দলনেতার পাশে।” এ টুকু শুনেই অনেকে হাসতে শুরু করে দিয়েছিলেন। কিন্তু জেটলি একটু থেমে বলেন। তবে দেখুন ও দিকে বসলেও ডেপুটি চেয়ারম্যানের নজর সব সময় সামনের দিকে তথা আমাদের দিকেই থাকবে। এ বার হেসে ফেলেন মোদী-গুলাম নবিরাও।
Be the first to comment