পাহাড়, চা বাগান, জাতীয় উদ্যান মায় ছবির মতই সুন্দর নীলগিরি পর্বতমালা। তামিলনাড়ু থেকে শুরু করে কর্নাটক অবধি চলে গিয়েছে নীলগিরি পর্বতের সংরক্ষিত এলিফ্যান্ট করিডর তথা হাতির পথ। কিন্তু সে পথ আড়াল করে বেআইনি নির্মাণের জন্য ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ২৭ টি রিসর্ট ‘সিল’ করে দেওয়ার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। এর মধ্যে রয়েছে বলিউড মেগা স্টার তথা প্রাক্তন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ মিঠুন চক্রবর্তীর রিসর্টও। নীলগিরির মাসিনাগুড়িতে যে রিসর্টের নাম ‘মোনার্ক সাফারি পার্ক’।
তামিলনাড়ুর এলিফ্যান্ট করিডর এ ভাবে সুরক্ষিত রাখার নেপথ্যে রয়েছেন নীলগিরি জেলা শাসক। বয়স কম। কিন্তু কাজে তিনি অতিশয় ক্ষিপ্র। নাম ইনোসেন্ট জে দিব্যা। মূলত তাঁর উদ্যোগই হইচই ফেলে দিয়েছে নীলগিরি-তে। যাবতীয় তথ্য খতিয়ে দেখে দিব্যাই রিপোর্ট দিয়েছিলেন যে, নীলগিরি-তে বেআইনি ভাবে চলছে ৩৯ টি রিসর্ট। এর মধ্যে ১২ টি রিসর্টের কাছে কোনও সরকারি অনুমতিই নেই। বাকি ২৭ জনকে শুধু ব্যক্তিগত ভাবে থাকার জন্য বাড়ি বানানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তাঁরা পুরোদস্তুর রিসর্ট বানিয়ে ফেলেছেন।
দিব্যার রিপোর্টে বলা হয়েছে, মাসিনাগুড়িতে মিঠুন চক্রবর্তীর যে জমি রয়েছে, সেখানে কেবল ওনাকে বাড়ি বানানোর অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, রিসর্ট নয়। প্রসঙ্গত, মাসিনাগুড়ি থেকে ত্রিশ কিলোমিটার দূরে উটি-তে মিঠুনের আরও একটি হোটেল রয়েছে বহুদিন ধরে। সেটা নিয়ে অবশ্য কোনও বিতর্ক তৈরি হয়নি।
এই রিপোর্টের ভিত্তিতেই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি মদন লোকুর, এস আব্দুল নাজির এবং দীপক গুপ্ত বৃহস্পতিবার নির্দেশ দেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ২৭ টি রিসর্ট সিল করে দিতে হবে। বাকি ১২টি রিসর্ট কর্তৃপক্ষকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হল, তার মধ্যে যদি তারা বৈধ অনুমতি পত্র দেখাতে পারে ভাল, নইলে সেগুলিও বন্ধ করে দেওয়া হবে।
তবে তামিলনাড়ুর প্রশাসনিক কর্তারা বলছেন, ওই ১২টি রিসর্টও ছাড় পাওয়ার সম্ভাবনা কম। সুপ্রিম কোর্টে সংশ্লিষ্ট ২৭ টি রিসর্ট কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও আইনজীবী উপস্থিত ছিলেন না। মিঠুন গ্রুপ অব হোটেলসের তরফেও কেউ সওয়াল করেননি। বাইরেও মনার্ক হোটেলের তরফে কোনও মন্তব্য করা হয়নি। ১২ টি হোটেল কর্তৃপক্ষের তরফে আইনজীবীরা আরও কিছু কাগজপত্র আদালতে পেশ করা জন্য দু’দিন আরও সময় চেয়েছেন। তাই তাদের সময় দিয়েছেন বিচারপতিরা। তবে জেলা শাসক সব কিছু খতিয়েই মামলা করেছেন। সুতরাং কারও পার পাওয়ার সম্ভাবনা নেই।
Be the first to comment