ATM প্রতারণার তদন্তে মশলার অভাব নেই। ডার্ক ওয়েব থেকে শুরু করে মহিলা, অপরাধের নুন-হলুদ-তেল সবই হাজির। কলকাতায় সক্রিয় মুম্বই চক্রের এক চাঁইয়ের সঙ্গে বিশেষ সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল কলকাতার বাসিন্দা এক মহিলার। পুলিশি তদন্তে এই তথ্য জানা গেছে। পাশাপাশি, প্রতারণার সব যন্ত্রই ডার্ক ওয়েবে মিলত বলে জেনেছেন তদন্তকারীরা। পুলিশ সূত্রে খবর, ডার্ক ওয়েবে রীতিমতো নিলাম হয় আমজনতার অ্যাকাউন্টের তথ্য। সব জেনেশুনে ভ্রু কোঁচকাচ্ছেন তদন্তকারীরা।
এক কথায় বললে ডার্ক ওয়েব হল ইন্টারনেটের অন্ধকার দুনিয়া। নেট ফ্রেন্ডলি অপরাধীদের অবাধ বিচরণের পৃথিবী বললেও কম বলা হয়। গোয়েন্দারা বলছেন, রাষ্ট্রের গোপন তথ্য থেকে সন্ত্রাসবাদীদের নেটওয়ার্ক, যোগাযোগের এ যেন এক আজব দুনিয়া। কলকাতায় ড্রাগচক্রের পর্দাফাঁসের পর জানা যায়, অভিজাত কলেজের পড়ুয়ারা পার্টিড্রাগের অর্ডার করত এই ডার্ক ওয়েবেই। অন্ধকার এই দুনিয়া থেকে সরবরাহ করা সামগ্রী টাকায় কেনাবেচা না করলেও চলে। এখানে বহুল ব্যবহার বিট কয়েনের। এই ওয়েবই ব্যবহার করা হত ATM প্রতারণায়। গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন এই তথ্যই।
গতকাল শহরে আনা হয় কর্নেল কনস্টেনটাইন, এড্রিয়ানদের। আনা হয় নানাকেও। তাদের আদালতে তোলা হলে ১৪ দিনের পুলিশ হেপাজতের নির্দেশ দেন বিচারক। আদালতে তোলার আগে ওই তিনজনকে জেরা করার জন্য খুবই কম সময় পেয়েছেন তদন্তকারীরা। জানা গেছে, এড্রিয়ান ক্লোনিং মাস্টার। স্কিমিং মেশিনে পাওয়া তথ্য জাল ATM কার্ডে ট্রান্সফারের কলার টেকনলজি তার কাছে জলভাত। এখন পর্যন্ত এই প্রতারণা চক্রের যে আটজনকে জেরা করা হয়েছে, তাদের কেউই ক্লোনিংয়ের বিষয়টি স্বীকার করেনি। এক তদন্তকারী অফিসারের কথায়, “ক্লোনিংয়ে যুক্ত থাকার কথা এই প্রথম কেউ স্বীকার করল। এড্রিয়ানকে জেরা করে অনেক তথ্য পাওয়া যাবে বলে মনে করছি আমরা।
এদিকে কলকাতা থেকে গ্রেপ্তার হওয়া রোহিত নায়ার ও তার সঙ্গী সুধীর রাজন, সাহিল খানদের জেরা করে বেশ কিছু নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। দু’বছর অস্ট্রেলিয়ায় ছিল সাহিল। সেখানে সে বিয়ে করে গুয়েতামালার যুবতিকে। অস্ট্রেলিয়া থেকে ফিরে মুম্বইয়ে ব্যবসা শুরু করে। কিন্তু, ব্যবসায় মন্দা দেখা দিলে বেছে নেয় অপরাধ জগত। কারণ অধুনিক লাইফস্টাইলে অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছিল সে। অপরাধ জগতে প্রবেশের জন্য এই জগতের মাস্টারমাইন্ডদের খোঁজ করত সে। সাহিল নাম লেখায় ATM জালিয়াতদের খাতায়। মূলত সে স্ক্রিমিং ডিভাইস বসাত। কলকাতায় সে বেছে নিয়েছিল অন্য পদ্ধতি। স্থানীয় এক যুবতিকে প্রেমের সম্পর্কে জড়ায়। সূত্রের খবর, সেই যুবতি বিউটি পার্লারের মালিক। এই চক্রের সঙ্গে তার কোনও যোগ আছে কি না, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।
Be the first to comment