ইলিশ মাছ, জামদানি শাড়ি, সন্দেশ, দই-মিষ্টি অনুপ্রবেশকারী, না শরণার্থী ? আসলে BJP সরকার এসবের সংস্কৃতি বোঝে না। তারা শুধু বিভেদের সংস্কৃতি বোঝে। বাংলার সভ্যতা সম্পর্কে তাদের কোনও ধারণা নেই। বাংলায় কথা বলা BJP-র কাছে অপরাধ। তাই বাঙালি হলেই তাড়িয়ে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। বাংলা ভাষা এশিয়াতে দ্বিতীয় ও সারা বিশ্বে পঞ্চম। এক সময় বাংলা দেশের রাজধানী ছিল। ওরা (BJP) কাউকে সম্মান করতে জানে না। একটা ঘৃণ্য বিষয় চালিয়ে দেশে বিভেদ ঘটাচ্ছে। প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে তারা।” আজ বিধানসভায় নিজের ঘরে বসে একথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “জামদানি শাড়ি বাংলাদেশে আছে, আমাদের এখানেও আছে। সেটা উদ্বাস্তু, না শরণার্থী ? সন্দেশ অনুপ্ৰবেশকারী, নাকি উদ্বাস্তু ? মিষ্টি দই অনুপ্রবেশকারী, নাকি শরণার্থী ? আমি অনুপ্রবেশকারী, নাকি শরণার্থী ? আমার মায়ের জন্ম সার্টিফিকেট দিতে বললে পারব না। মায়ের জন্মদিন কবে তাই জানি না। সার্টিফিকেট কোথায় পাব ? একটা সিস্টেম তো থাকা উচিত। আমি একটা প্রোগ্রামে ছিলাম, একজন আমাকে টুইট করে জানাল ১৯৭০ সালের ভোটার লিস্টটা দয়া করে দেবেন?”
অসমে NRC ইশু নিয়ে BJP-কে কটাক্ষ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “ইচ্ছাকৃতভাবে অসমে একটা সাম্প্রদায়িকতার রাজনীতি করছে দেশের শাসক দল। BJP মনে করছে তারাই থাকবে, আর কেউ থাকবে না। এটা বরদাস্ত করা হবে না। মানুষ এর উত্তর দেবে। শান্ত একটা জায়গাকে অশান্ত করার চক্রান্ত করছে BJP সরকার।” রাজ্যের সংস্কৃতি সম্পর্কে তিনি বলেন, “বাংলার সংস্কৃতিকে ভুলে গেলে চলবে না। এখানে কোনও রকমভাবেই সাম্প্রদায়িকতা করা যাবে না। যাঁরা সাম্প্রদায়িকতা করে তাঁদের আমি খুব ঘৃণা করি
BJP-কে কটাক্ষ করে তিনি আরও বলেন, “বাংলার সংস্কৃতি যারা জানে না, তারা এসব কথা বলে। আমি তো সব রাজ্যকেই ভালোবাসি। বাংলায় কথা বলা তো অপরাধ নয়। BJP-র এত বাংলা বিদ্বেষ কেন ? বাংলাকে বাদ দিয়ে ভারত চলে না, আমি উদ্বাস্তুদের লড়াই সংগ্রাম দেখেছি। তাই তাদের জন্য লড়াই করি। একবার ওরা উদ্বাস্তু হয়েছে, আবার হবে নাকি ? ওরা কাউকে সম্মান করে না, উগ্রপন্থার চিন্তাধারা নিয়ে চলে।”
উল্লেখ্য, NRC ইশুতে ইতিমধ্যে সংসদে সরব হয়েছে বিরোধীরা। তৃণমূলের প্রতিনিধি দল অসমে গেলে শিলচর বিমানবন্দরেই তাদের আটকে দেওয়া হয়। পুলিশের সঙ্গে কার্যত ধস্তাধস্তি হয় তাঁদের। তারপর শিলচর ও অসমের ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে বিভিন্ন বিরোধী দলের দাবি, অসমে এমন কোনও পরিস্থিতি হয়নি যে তৃণমূল তাদের সাংসদ-বিধায়কদের সেখানে পাঠিয়ে দিল। ইচ্ছে করে রাজনীতি করার জন্য তৃণমূলের এই কর্মসূচি। এখনও পর্যন্ত যাদের নাম বাদ গেছে সেটা একটা খসড়া তালিকা থেকে। চূড়ান্ত তালিকা এখনও হয়নি। তাহলে কেন এত আগে থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শোরগোল করছেন ?
Be the first to comment