পিছিয়েই চলেছে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা পঞ্চায়েতের আসনগুলি নিয়ে মামলার শুনানির তারিখ। শুক্রবার এই মামলা ওঠার কথা ছিল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর মৃত্যুর কারণে গত কালই সাত দিনের রাষ্ট্রীয় শোক এবং শুক্রবার অর্ধ দবস ছুটি ঘোষণা করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তাই এ দিন দুপুর একটায় কোর্টের কাজ বন্ধ হয়ে যায় এবং এ দিনও তিন বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চের এক জন না আসায় শুনানি হয়নি পঞ্চায়েত মামলার। আদালত জানিয়েছে আগামী সোমবার হবে এই মামলার শুনানি। এ দিকে আদালতে দেরি হচ্ছে দেখে বৃহস্পতিবার থেকেই অনেক পঞ্চায়েতে প্রশাসক নিয়োগ শুরু হয়ে গিয়েছে। বিশেষত যেগুলিতে বোর্ড গঠনে সমস্যা নেই।
বাংলার গ্রামের সরকার নির্বাচনের আগেই শাসকের সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে একাধিক মামলা হয়েছিল। কখনও ই-নমিনেশন ঘিরে, কখনও আবার নিরাপত্তা নিয়ে। মনোনয়ন জমা নেওয়ার দিন বাড়ানোর বিজ্ঞপ্তি জারি করেও তা প্রত্যাহার করে নেয় রাজ্য নির্বাচন কমিশন। বিরোধীরা অভিযোগ তোলেন রাজ্যের শাসক দলের চাপেই এই কাজ করেছে কমিশন। মামলা গড়ায় দেশের শীর্ষ আদালতে। সুপ্রিম কোর্ট ভোট করার অনুমতি দিলেও আটকে দেয় বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ীদের সংশাপত্র দেওয়া। আদালত জানিয়ে দেয় কোনওভাবেই তাঁদের সার্টিফিকেট দেওয়া যাবে না। ফলে সবুজ আবির মেখে নেওয়ার পরও পঞ্চায়েত অফিসে ঢুকতে পারেননি এই আসনগুলির জয়ীরা। যার মধ্যে সবচেয়ে বেশি এই রকম আসন ছিল ডায়মন্ডহারবার লোকসভা কেন্দ্র এবং বীরভূম জেলায়।
৩ জুলাই এই মামলার শুনানি হয়। সেখানেও আদালতের প্রশ্নের ঠিকঠাক জবাব দিতে না পারায় ভর্ৎসিত হতে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী এবং কমিশন সচিবকে। কত আসনে ভোট হয়নি জানতে চায় আদালত। উত্তর দিতে গিয়ে নাস্তানাবুদ হয়ে পড়ে কমিশন। পরের দিন আবার শুনানি হয়। সেখানে আদালত জানায় ১৭ অগস্ট মামলার রায় দেওয়া হবে। কিন্তু রাজ্যের তরফে বলা হয়, ৭ অগস্ট পঞ্চায়েতগুলির মেয়াদ শেষ হয়ে যাবে। বোর্ড গঠনের জন্য তার আগে রায় দেওয়ার আবেদন জানায় রাজ্য। তখনই ডিভিশন বেঞ্চ জানতে চায় এগুলি তো শুধুমাত্র বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতা আসন।
এরসঙ্গে বোর্ড গঠনের সম্পর্ক কী? তখন রাজ্যের তরফে জানানো হয়, এমন অনেক গ্রাম পঞ্চায়েত এবং পঞ্চায়েত সমিতি আছে যেখানে এই আসনগুলির ফয়সালা না হলে বোর্ড গঠন সম্ভব নয়। এরপর ৬ অগস্ট তারিখ দেয় আদালত। সেদিন বিচারপতি চন্দ্রচূড় না আসায় শুনানি পিছিয়ে যায়। এর মধ্যেই ৯ অগস্ট বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেয় নবান্ন। ১৬ অগস্ট থেকে বোর্ড গঠনের বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হয় সরকারের তরফে। যার মধ্যে ছিল ৮টি জেলা পরিষদও। ৬ তারিখের শুনানি হয় ১৩ অগস্ট। সেদিনও রায়দান করেনি সুপ্রিম কোর্ট। ১৪ তারিখ বিচারপতি না আসায় আবার পিছোয় শুনানি। তারিখ দেওয়া হয় আজ শুক্রবার। কিন্তু এ দিনও শুনানি না হওয়ায় ৩৪ শতাংশের জট এখনও কাটল না।
Be the first to comment