স্বাধীনতা দিবসের সকাল ৷ পাড়ার মোড়ে মোড়ে দেশাত্মবোধক গানে তখন মুখরিত আকাশ বাতাস ৷ চলছে জাতীয় পতাকাকে মাথা তুলে দাঁড় করানোর তোড়জোর ৷ সেই মুহূর্তে থেকে কোথা থেকে যেন ভেসে আসছে বাচ্চার কান্নার শব্দ ৷ কান্নার শব্দটা এমন, যেন কোনও সদ্যোজাত কাঁদছে ৷
কিন্তু কোথা থেকে আসছে সেই কান্নার আওয়াজ ? সেই সময় দুধ দিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসছেন এক দুধওয়ালা ৷ তিনিই প্রথম বাচ্চার কান্নার শব্দ ৷ প্রথমে গা করেননি তিনি। তারপর কী মনে হতেই দুধওয়ালার সঙ্গে বাইরে বেরিয়ে আসেন। নর্দমার কাছে এসে কান পাততেই সদ্যোজাতর চিলচিৎকার।
নর্দমা লাগোয়া বাড়ির মালকিন গীতাদেবীকে ডেকে সে কথা জানান ওই দুধওয়ালা ৷ সঙ্গে সঙ্গে ওই মহিলা সাবধানে নর্দমার মধ্যে হাত ঢুকিয়ে একরত্তির পা ছুঁয়ে ফেলেন। হাত সামান্য নাড়াচাড়া করতেই বুঝতে পারেন নর্দমা থেকে অনায়াসেই একরত্তিকে বের করে আনা যাবে। সঙ্গেসঙ্গেই সদ্যোজাতকে বের করে গলা থেকে নাভিরজ্জু সরালেন। তারপর স্নান করিয়ে তোয়ালেতে মুড়িয়ে সোজা হাসাপাতাল। ইতিমধ্যেই নর্দমা থেকে শিশু উদ্ধারের গোটা ভিডিও ভাইরাল হয়েছে। গীতাদেবীর কাজের প্রশংসায় সাড়া পড়েছে সর্বত্র। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে চেন্নাইয়ের ভালাসারাভাক্কম এলাকায়।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, সামান্য শ্বাসকষ্ট থাকলেও এখন স্বাভাবিক রয়েছে শিশু ‘সুথানথিরাম’। এই নামটিই রাখা হয়েছে ৷ যার অর্থ স্বাধীনতা। গীতা জানিয়েছেন, “আমি খুব খুশি যে ও ওর বেঁচে থাকার স্বাধীনতা ফিরে পেয়েছে।” পুলিশ জানিয়েছে, গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে তারা। নর্দমাটি শুকনো থাকায় শিশুটির তেমন কোনও ক্ষতি হয়নি। এখন তাকে সরকারি শিশু হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানকার চিকিৎসকরা তাকে সুস্থ ঘোষণা করেল শিশুদের হোমে পাঠানো হবে। এদিকে সুথানথিরামের সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছেন নেটিজেনরা। আর্থিক সাহায্যের পাশপাশি অনেকেই তাকে দত্তক নিতেও আগ্রহ দেখিয়েছেন।
Be the first to comment