অস্ত্র সহ গ্রেফতার দুষ্কৃতীদের জেরা করে চোখ কপালে উঠল রাজ্য পুলিশের

Spread the love
দিনহাটা যাওয়ার পথে অস্ত্র সহ গ্রেফতার দুষ্কৃতীদের জেরা করে চোখ কপালে উঠল রাজ্য পুলিশের। জানা গিয়েছে এমন প্রায় কয়েক হাজার অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র মজুত করা হয়েছে দিনহাটা সংলগ্ন এলাকায়। ঘটনায় উঠে আসছে জেলার এক প্রভাবশালী ব্যক্তির নামও। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে পৌঁছেছেন উত্তরবঙ্গের আইজি  আনন্দ কুমার। সিআইডির পাশাপাশি অস্ত্র কাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছেন আইবির পদস্থ আধিকারিকরাও।
১৪ অগস্ট, দিনহাটা যাওয়ার পথে একটি গাড়ি থেকে উদ্ধার হয় বিপুল পরিমাণ আগ্নেয়াস্ত্র ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম। গ্রেফতার করা হয় ৬ জনকে। এরা প্রত্যেকেই শাসকদলের সমর্থক বলে অভিযোগ। রাজ্যের আরও বেশ কয়েকটি জেলার মতোই তৃণমূলের অভ্যন্তরীণ কোন্দলে জেরবার কোচবিহারও। বিশেষত ‘মাদার’ এবং যুব তৃণমূলের বিবাদে প্রায়শই গুলি বোমায় রণক্ষেত্রের চেহারা নিচ্ছে দিনহাটা। তৃণমূলের সর্বোচ্চ নেতৃত্বের নির্দেশের পরও থামেনি গণ্ডগোল।
অস্ত্রকাণ্ডের তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, পঞ্চায়েত বোর্ডের দখল নিতেই সংগ্রহ করা হচ্ছিল অস্ত্র ও বোমা তৈরির মশলা। যুবদের দাদাগিরির জবাব দিতেই মাদারের সমর্থকরা এ সব অস্ত্র ও বোমা তৈরির সরঞ্জাম জোগাড় করতে শুরু করেছিল বলেও জানতে পেরেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, এ ব্যাপারে চাঞ্চল্যকর স্বীকারোক্তি দিয়েছেন ধৃত বোলেরো গাড়ির চালক আশরাফুল হক। তিনি জানান, পুলিশের অভিযানে অস্ত্র সহ আটক ওই গাড়িটি ব্যবহার করতেন গীতালদহর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি মাফুজা রহমান। এই মাফুজার  বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে দীর্ঘদিন ধরেই। এই গাড়ি ও একটি মারুতি ভ্যানে করেই দিনহাটা নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল অস্ত্রশস্ত্র ও বোমা তৈরির মশলা। পুলিশের চোখ থেকে বাঁচতে মারুতি ভ্যানের গায়ে লাগানো হয়েছিল গভর্মেন্ট অফ ওয়েস্ট বেঙ্গলের স্টিকার এবং তার সঙ্গে নীল বাতিও। পুলিশ জানিয়েছে, মাফুজা পলাতক।
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, ধৃতদের জেরা করে  অস্ত্র আমদানিতে দিনহাটা ১ নং ব্লকের তৃণমূল সভাপতির নামও উঠে এসেছে বারবার। গোটা দিনহাটা জুড়ে কয়েক হাজার আগ্নেয়াস্ত্র তারা জমা করেছে বলেও জেরায় কবুল করেছে ধৃতরা। বিষয়টি নিয়ে কথা বলার জন্য উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে বারবার ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।
দিনহাটাতে এখন কার্যত কোনঠাসা তৃণমূল মাদার। যুবদের বাড়বাড়ন্ত প্রায় প্রশ্নাতীত। তাই ঘুরে দাঁড়াতেই কি অস্ত্র সম্ভারে ভরসা ? এই প্রশ্নেরই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করছে পুলিশ। গোটা ঘটনার পেছনে প্রভাবশালী এক ব্যক্তির জড়িত থাকার বিষয়টিও নজরে এসেছে তদন্তকারী আধিকারিকদের। বিষয়টি ইতিমধ্যেই তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন প্রশাসনের ওপরতলায়। আর তারপরেই বাড়তি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে মামলাটিকে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*