হয় সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ৭০০ কোটি টাকা অনুদান গ্রহণ করা হোক, নয়তো কেন্দ্রীয় সরকার ক্ষতিপূরণ দিক। এমনটাই দাবি জানাল কেরল।
ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত কেরল। মারা গিয়েছেন ৩০০-র বেশি লোক। ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। বন্যাবিধ্বস্ত কেরলকে সাহায্যের জন্য ইতিমধ্যেই এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন রাজ্য। কেন্দ্রীয় সরকার এখনও পর্যন্ত বরাদ্দ করেছে ৬০০ কোটি টাকা। এর মধ্যেই শোনা গিয়েছিল, সংযুক্ত আরব আমিরশাহির তরফে কেরলের বন্যাত্রাণে ৭০০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়া হবে।
তারপরেই শোনা যায়, আরব আমিরশাহির ৭০০ কোটি টাকা অনুদান নাও নিতে পারে কেন্দ্রীয় সরকার। কেন্দ্রীয় সরকারের এক উচ্চপদস্থ অফিসারের বক্তব্য, ‘আমরা কেরলে বন্যাত্রাণের জন্য বিদেশের সাহায্য নিচ্ছি না। সংযুক্ত আরব আমিরশাহির ক্ষেত্রেও সেকথা প্রযোজ্য। তবে এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে বিদেশমন্ত্রক।’
বিদেশমন্ত্রক থেকে জানানো হয়েছে, এখনও আমিরশাহি থেকে কেউ অনুদানের কথা বলেনি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে বলা হয়েছে, যে ভারতীয়রা বিদেশে থাকেন, তাঁরা ইচ্ছা করলে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে টাকা পাঠাতে পারেন। সেই অর্থের ওপরে ট্যাক্স নেওয়া হবে না। যে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি বিদেশী অনুদান নিয়ন্ত্রণ আইনে নথিভূক্ত, তারা যদি বিদেশ থেকে অনুদান পায়, সেই অর্থের ওপরে কর নেওয়া হবে না। কিন্তু নথিভূক্ত নয় এমন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলি অনুদান পেলে তার ওপরে কর নেওয়া হবে। অন্যদিকে কেরলের অর্থমন্ত্রী টি.এম টমাস আইজ্যাক বলেছেন, আমিরশাহি অনুদান দিলে কেন্দ্রীয় সরকার তার ওপরে কর বসাতে পারে না।
এরপরেই অনুদানের দাবি জানায় কেরল সরকার। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেছেন, বন্যা বিধ্বস্ত রাজ্যের পুনর্গঠনে লাগবে ২ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। কেন্দ্রীয় সরকার এখনও পর্যন্ত বরাদ্দ করতে পেরেছে ৬০০ কোটি। তাই ‘জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা পরিকল্পনা’ অনুযায়ী কেন্দ্র সরকারের উচিত সংযুক্ত আরব আমিরশাহির সাহায্য গ্রহণ করা। ২০১৬ সালে ‘জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা পরিকল্পনা’য় বলা হয়েছিল দেশে যদি জাতীয় বিপর্যয়ের পরিস্থিতি তৈরি হয়, তাহলে বাইরে থেকে কোনও দেশ অর্থ সাহায্য করতে চাইলে সেই সাহায্য নেওয়া হবে।
কেরল সরকারের তরফে দাবি জানানো হয়, বন্যায় যে পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে তাতে একে জাতীয় বিপর্যয় বলে ঘোষণা করা উচিত। তাহলে সেক্ষেত্রে বাইরের সাহায্য নেওয়ার ক্ষেত্রে কোনও বাধা থাকবে না। কিন্তু কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের বক্তব্য, বিপর্যয় মোকাবিলা আইনে যে কোনও প্রাকৃতিক দুর্যোগকেই জাতীয় বিপর্যয় ঘোষণা করা যায় না। কেন্দ্র ইতিমধ্যে ওই বন্যাকে গুরুতর প্রাকৃতিক বিপর্যয় বলে স্বীকৃতি দিয়েছে।
Be the first to comment