সদ্যোজাতকে মেরে দেহ খাটের নীচে একটি বাক্সে লুকিয়ে রাখার অভিযোগ উঠল মায়ের বিরুদ্ধে

Spread the love

সদ্যোজাতকে শ্বাসরোধ করে মেরে দেহ প্লাস্টিকে জড়িয়ে খাটের নীচে একটি বাক্সে লুকিয়ে রাখার অভিযোগ উঠল মায়ের বিরুদ্ধে।

বৃহস্পতিবার এই ঘটনা জানাজানি হতেই উত্তেজনা ছড়ায় হরিদেবপুরের দরগাতলা এলাকায়। মানোয়ারার বড় মেয়ে দাবি করেছে, তার চোখের সামনেই ঘটেছে গোটা ঘটনা। কিন্তু স্ত্রী কেন ‘খুন’ করলেন সন্তানকে, সে সম্পর্কে তাঁর কোনও ধারণাই নেই বলে দাবি স্বামীর।

স্থানীয় সূত্রে খবর, দরগাতলায় কয়েক মাস আগে দু’টি ঘর ভাড়া নিয়ে থাকতে শুরু করেন শেখ হান্নান ও তাঁর সন্তানসম্ভবা স্ত্রী মানোয়ারা। শহরের এক বইয়ের দোকানের কর্মী হান্নানের পরিবারে ছিল তাঁদের দুই মেয়ে ও এক ছেলে। মানোয়ারা গ্রেফতার হওয়ার পরে ছ’বছরের ভাই আর সাড়ে তিন বছরের বোনকে নিয়ে পাশের পাড়ায় দিদার কাছে চলে গিয়েছে মানোয়ারার বড় মেয়ে, চোদ্দ বছরের রুকসানা। তার দাবি, পুরো ঘটনাটাই সে দেখেছে।

রুকসানা জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেল ৩টে নাগাদ মানোয়ারার প্রসব যন্ত্রণা শুরু হয়। বাড়ির দরজা-জানলা বন্ধ করে গরম জল, কাঁচি এনে নিজেই প্রসবের ব্যবস্থা করেন মানোয়ারা। তার পরে জন্ম দেন পুত্রসন্তানের। তারপরেই তিনি সদ্যোজাতকে গলা টিপে মেরে ফেলেন বলে অভিযোগ।

প্রতিবেশীদের দাবি, মঙ্গলবার রাতে হান্নানের ঘর থেকে সদ্যোজাতের কান্নার আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু অভিযোগ, বুধবার গিয়ে সদ্যোজাতের খোঁজ করলে মানোয়ারা তাঁদের চলে যেতে বলেন। অভিযোগ, মানোয়ারা প্রতিবেশীদের জানিয়েছিলেন, তাঁর কোনও সন্তান হয়নি। পড়শিদের বক্তব্য, মানোয়ারার আচরণে সন্দেহ হয় তাঁদের। এর পরেই তাঁরা হরিদেবপুর থানায় খবর পাঠান।

স্থানীয়দের খবরের ভিত্তিতেই বুধবার বিকেল চারটে নাগাদ হান্নানের বাড়িতে যায় পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, মানোয়ারা বিবিকে বারবার জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। কিছু ক্ষণ পরে মানোয়ারা নিজেই জানান, সদ্যোজাতের দেহ রয়েছে খাটের নীচে একটি বাক্সে। সেখান থেকেই প্লাস্টিকে জড়ানো অবস্থায় শিশুর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। এর পরে পরিবারের বাকি সদস্যদের থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। রাত পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদের পরে গ্রেফতার হন মানোয়ারা।

এ দিন হান্নান দাবি করেন, মঙ্গল ও বুধবার বাড়িতে ছিলেন না তিনি। ফলে সন্তানের জন্ম এবং মৃত্যুর ব্যাপারে বুধবার বিকেলের আগে কিছুই জানতেন না। সঙ্গে তাঁর অভিযোগ, মানোয়ারা বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। প্রায় ছ’বছর ধরে এক যুবকের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক। সেই সম্পর্কের জেরেই এই সন্তান বলে দাবি তাঁর। তবে প্রসবের পরে কেন মানোয়ারা সদ্যোজাতকে মেরে ফেললেন, সে সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না বলে বক্তব্য হান্নানের।

লালবাজার সূত্রে অবশ্য খবর, মানোয়ারাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। কী কারণে তিনি এই কাজ করলেন সেটা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*