বডি শেমিং-এর জেরেই প্রাণ গেল দিল্লির এক তরুণীর

Spread the love

বডি শেমিং। একুশ শতকের অতি পরিচিত শব্দ। রোগা-মোটা যাই হোন না কেন তা নিয়ে ভরা বাজারে আপনাকে বেইজ্জত করবে একদল। শুধুমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া নয়, আমাদের চারপাশেও এ ঘটনা হামেশাই ঘটে। আম জনতা থেকে সেলিব্রেটি বাদ যান না কেউই। তবে এ বার এই বডি শেমিং-এর জেরেই প্রাণ গেল দিল্লির এক তরুণীর।

জীবনের থেকে অনেক কিছুই চেয়েছিলেন। কিন্তু কিছুই পাননি। বরং তাঁর শরীরের জন্য তাঁকে প্রতি মুহূর্তে অপমানিত হতে হয়েছে। আর সেই জন্যই আত্মঘাতী হয়েছে পূর্ব দিল্লির মান্ডাওয়ালির বাসিন্দা বছর বাইশের এক তরুণী। পুলিশ জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আত্মহত্যা করেছেন ওই তরুণী। ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোত উদ্ধার করেছে পুলিশ। ওই নোটে লেখা ছিল, ‘নিজেকে খাঁচায় বন্দি মনে হয় ওই তরুণীর।’ পুলিশ জানিয়েছে, তরুণীর পরিবারও ঠিক বুঝতে পারেননি যে তাঁদের মেয়ে এমনটা করবে।

বছর খানেক আগে বাবা মারা গিয়েছে। তারপর থেকে মা এবং ছোট ভাই-বোনদের দিয়ে মান্ডাওয়ালিতেই থাকতেন ওই তরুণী। কয়েক সপ্তাহ ধরে লক্ষ্মী নগরে একটি বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিও করছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় আচমকাই গলাই ফাঁস লাগিয়ে নিজের ঘরের সিলিং ফ্যান থেকে আত্মহত্যা করেন তিনি। তাঁর ভাই-বোনদের একজনই বিষয়টা প্রথম দেখতে পায়। এরপর তাঁদের মাকে ডাকে সে। চিৎকার- চেঁচামেচিতে জড়ো হন প্রতিবেশিরা। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। দ্রুত স্থানীয় হাসপাতালেও নিয়ে যাওয়া হয় ওই তরুণীকে। কিন্তু চিকিৎসকেরা জানান, সেখানে পৌঁছনোর আগেই মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

পুলিশ জানিয়েছে, ওই সুইসাইড নোটে তরুণী লিখেছিলেন, জীবনে অনেক কিছুই করতে চাইতেন তিনি। কিন্তু প্রতি পদে শরীরের জন্য অপমানিত হতে হতো তাঁকে। তাঁর মনে হতো একটা খাঁচায় বন্দি রয়েছেন তিনি। তাই মুক্তি পেতে নিজেকে শেষ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তিনি। নিজের সুখের জন্যই এ কাজ করেছেন বলে ওই নোটে লিখেছিলেন তরুণী। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়া পর পুলিশ জানিয়েছে, কোনও রকম অসুস্থতা ছিল না তরুণীর। ছিল না কোনও মানসিক অবসাদও। মেয়েটির পরিবারও কিছু আন্দাজ করতে পারেনি। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে তারা। জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তরুণীর অফিস কলিগ এবং বন্ধু-বান্ধবদেরও।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*