ভয়াবহ বন্যায় বিপর্যস্ত কেরল। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক অবস্থায় আনতে সময়ে লেগে জেতে পারে বেশ কয়েক বছর। খরচের পরিমাণও বিপুল। ইতিমধ্যেই কেরলকে সাহায্য করার জন্য এগিয়ে এসেছে বিভিন্ন সংস্থা। সারা ভারত জুড়ে যে যেভাবে যতটা পারছেন সাহায্য করার চেষ্টা করছে কেরল। এ বার রাজ্যবাসীর কাছেও সাহায্যের জন্য আবেদন করেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। রাজ্যবাসীর এক মাসের বেতন যেন তাঁরা কেরলের সাহায্যের জন্য ত্রাণ হিসেবে দান করেন। এমনটাই অনুরোধ জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।
গত ৮ অগস্ট থেকে বৃষ্টি শুরু হয়েছিল কেরলে। টানা সপ্তাহ দুয়েকের প্রবল বৃষ্টিতে সৃষ্টি হয়েছিল বন্যা পরিস্থিতি। মারা গিয়েছে ৩০০-র বেশি মানুষ। ভেসে গিয়েছিল কেরলের অধিকাংশ জেলা। ঘরবাড়ি, রাস্তাঘাট—-ধসের ফলে ক্ষতি হয়েছিল এই সব কিছুর। বিপুল পরিমাণে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছিল ফসলের। আর্থিক মূল্যে যার পরিমাণ ৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। পরিসংখ্যান বলছে, প্রায় ১০ হাজার কিলোমটার রাস্তাঘাট ভেঙে গিয়েছে ধসের কারণে। গৃহহীন হয়েছেন দু’লক্ষেরও বেশি মানুষ। রাজ্য জুড়ে তৈরি হয়েছিল দেড় হাজারেরও বেশি ত্রাণ শিবির।
তবে তীব্র প্রতিকুল পরিস্থিতিতেও জোরকদমে উদ্ধারকাজ চালিয়ে গিয়েছে নৌসেনা এবং বায়ুসেনা। জলে ডুবে যাওয়া বাড়ি থেকে তারা উদ্ধার করেছেন গর্ভবতী মহিলাকে। সেই মহিলা জন্ম দিয়েছেন সুস্থ সন্তানেরও। উদ্ধার হয়েছিলেন এক শয্যাশায়ী বৃদ্ধাও। শুধু মানুষ নন এক মহিলা পোষ্য কুকুরদেরও উদ্ধার করেছিল সেনাবাহিনী।
কেরলে এখন বৃষ্টি থেমে গিয়েছে। সরে গিয়েছে রেড অ্যালার্ট। কিন্তু পরিস্থিতি এখনও ভয়াবহ। ত্রাণ শিবির ছেড়ে বাড়িতে ফিরছেন বহু মানুষ। কিন্তু বাড়ির ধ্বংসাবশেষ ছাড়া চোখের সামনে পাচ্ছেন না কিছুই। শারীরিক এবং মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েছেন কেরলের বাসিন্দারা। ভয়ঙ্কর ভাবে বিপর্যস্ত সমগ্র কেরল। সব সমস্যা কাটিয়ে ভগবানের নিজের এলাকা আবার কবে তাঁর পুরনো অবতারে ফিরে যেতে পারে সেটাই এখন দেখার।
Be the first to comment