ভোটের সময় মানি এবং মাসল পাওয়ারের ব্যবহারকে যেন কঠোর হাতে দমন করেন তাঁরা, জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

Spread the love

উনিশের ভোট আসছে। তার আগে জাতীয় নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবেদন করলেন, ভোটের সময় মানি পাওয়ার এবং মাসল পাওয়ারের ব্যবহারকে যেন কঠোর হাতে দমন করেন তাঁরা।

তৃণমূলনেত্রীর বক্তব্য, “দেখা যাচ্ছে যে কিছু ধনী রাজনৈতিক দল ভোটের সময় হোস পাইপের জলের মতো টাকা খরচ করছে! এতে গরিব দলগুলো, এমনকি অনেক জাতীয় রাজনৈতিক দলও সঙ্কটের মুখে পড়ছে।”

লোকসভা ভোটের আগে সোমবার নয়াদিল্লিতে সর্বদল বৈঠক ডেকেছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। ওই বৈঠকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উপস্থিত ছিলেন না। তাঁর প্রতিনিধি হিসাবে ছিলেন তৃণমূল রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সী ও সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে কমিশনের সচিবের কাছে তাঁদের হাত দিয়ে একটি পাঁচ পাতার চিঠি পাঠান মমতা।

চিঠিতে তিনি আরও বলেন, “অভিজ্ঞতা বলছে ভোট কিনতে কখনও কখনও প্রচুর টাকা খরচ করা হচ্ছে, কখনও বা সরকারি এজেন্সি ব্যবহার করা হচ্ছে। যদি অর্থ শক্তি ও পেশী শক্তিই মূল মাপকাঠি হয়ে যায় তাহলে গণতান্ত্রিক কাঠামোটাই ধ্বংস হয়ে যাবে।”

উনিশের নির্বাচনে ভোট গ্রহণ ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের মাধ্যমে না করে ব্যালটের মাধ্যমে করার ব্যাপারে তৃণমূল কংগ্রেস অনেক আগে থেকে দাবি জানাচ্ছে। এ দিনের বৈঠকেও সেই দাবি জানিয়েছে তৃণমূল। একই দাবি করেছে কংগ্রেসও।

তবে সে দাবিতে কোনও নতুনত্ব নেই। বরং ভোটে ‘মানি পাওয়ার’ এবং ‘মাসল পাওয়ার বন্ধ’ করার ব্যাপারে মমতার মন্তব্য নিয়েই এ দিন রাজ্য রাজনীতিতে সাড়া পড়ে গিয়েছে। সদ্য পঞ্চায়েত ভোট শেষ হয়েছে। এবং গ্রাম গঞ্জের সেই ভোটে খোদ তৃণমূলের বিরুদ্ধেই টাকা ও পেশীর ব্যবহারের ভূরি ভূরি অভিযোগ উঠেছে। শাসক দলের কর্মী সমর্থকদের দাপটে ৩৪ শতাংশ আসনে মনোনয়ন পেশ করা যায়নি বলে আদালতে গিয়েছিলেন বিরোধীরা। এবং সেই পরিস্থিতি রাজ্য নির্বাচন কমিশন দৃশ্যত ঠুঁটো হয়ে বসেছিল বলেই অভিযোগ। সেই অভিজ্ঞতা যখন টাটকা, তখন জাতীয় নির্বাচন মমতার এ হেন দাবি নিয়েই এ দিন টিপ্পনী করতে ছাড়েননি বিরোধী নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, ভূতের মুখে এখন রাম নাম শোনা যাচ্ছে!

তবে পর্যবেক্ষকদের মতে, মমতা বন্দ্যোপা ধ্যায়ের এই মন্তব্যের অন্য কারণ রয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের আশঙ্কা রয়েছে লোকসভা ভোটের সময় দেদার পয়সা খরচ করবে বিজেপি। এমনিতেই এ বার বাংলায় আসন বাড়ানোকে পাখির চোখ করেছেন মোদী-অমিত শাহরা। মমতার আশঙ্কা, অর্থের লোভ দেখিয়ে এ বার তৃণমূলের মধ্যেও ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করতে পারে বিজেপি। সেই কারণেই কমিশনের কাছে এখন থেকেই দরবার করতে শুরু করেছে তৃণমূল। আগামী দিনে এ ব্যাপারে আরও সরব হতে পারেন তৃণমূলনেত্রী।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*