তৃণমূল কংগ্রেসের জন্মলগ্ন থেকে যা হয়নি, তাই হলো মঙ্গলবারের বারবেলায় মেয়ো রোডের ছাত্র সমাবেশে। এই প্রথম সভাপতিহীন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সমাবেশ হলো সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসে।
আর সেই সমাবেশের মঞ্চে দাঁড়িয়েই দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করে দিলেন,আগামী ১৫ দিনের মধ্যে নতুন কমিটি তৈরি করা হবে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সুব্রত বক্সী, অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়দের দায়িত্ব দেওয়া হলো এই কমিটি তৈরি করার। সঙ্গে নেত্রী এ-ও ঘোষণা করেন, শুধু এই তিন জন নয়, প্রাক্তন টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতিদের নিয়ে একটি কোর গ্রুপ তৈরি হবে। তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। তাতে থাকবেন তাপস রায়, বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায়, অশোক রুদ্ররা। ৮ সেপ্টেম্বর তৃণমূল ভবনে বেলা ১১ টায় শুরু হবে এই মিটিং।
কিন্তু জয়া দত্তর অপসারণের পর কে হবেন টিএমসিপি-র পরবর্তী রাজ্য সভাপতি? এই নিয়েই এখন জল্পনা তুঙ্গে উঠেছে।
এ দিন মঞ্চেও দেখা যায়নি সদ্য পদ খোয়ানো জয়া দত্তকে। প্রসঙ্গত, সভাপতিহীন প্রতিষ্ঠা দিবসের সমাবেশে ছাত্র সংগঠনের পক্ষে একমাত্র বক্তৃতা করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে উঠে আসা ছাত্রনেত্রী লগ্নজিতা চক্রবর্তী। শাসক দলে গুঞ্জন তাহলে কি পরবর্তী সভাপতি লগ্নজিতাই? জল্পনা উস্কে দিলেন মমতা নিজেই।
এ দিন মঞ্চেও দেখা যায়নি সদ্য পদ খোয়ানো জয়া দত্তকে। প্রসঙ্গত, সভাপতিহীন প্রতিষ্ঠা দিবসের সমাবেশে ছাত্র সংগঠনের পক্ষে একমাত্র বক্তৃতা করেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে উঠে আসা ছাত্রনেত্রী লগ্নজিতা চক্রবর্তী। শাসক দলে গুঞ্জন তাহলে কি পরবর্তী সভাপতি লগ্নজিতাই? জল্পনা উস্কে দিলেন মমতা নিজেই।
এ দিন সমাবেশে শুধু ছাত্র সংগঠনের পক্ষে লগ্নজিতা একমাত্র বক্তা ছিলেন তাই নয়,সমাবেশের শেষ লগ্নে জাতীয় সঙ্গীতের সময় সাদা সালোয়ার, সবুজ ওড়নায় লগ্নজিতাকে দেখা গেল একেবারে মুখ্যমন্ত্রীর পাশে দাঁড়াতে।
প্রসঙ্গত, কলেজে কলেজে ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু হতেই শাসকদলের ছাত্র সংগঠনের দিকে অভিযোগের আঙুল ওঠে। অভিযোগ এই যে, কলেজে কলেজে ভর্তির প্রক্রিয়া কার্যত সিন্ডিকেটের রূপ নিয়েছে। কলকাতা-সহ জেলাতেও ছড়িয়ে পড়েছিল এই কারবার। টাকা ফ্যালো ভর্তি হও। কার্যত এই ব্যবস্থাই চালু হয়ে যায় কলেজগুলিতে। খবর প্রকাশ্যে আসতেই হস্তক্ষেপ করেন মুখ্যমন্ত্রী। শিক্ষামন্ত্রীকে বাড়িতে ডেকে বৈঠক করেন। নির্দেশ দেন দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের। ময়দানে নামতে হয় কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকেও। বেশ কয়েকজন শাসক দলের ছাত্র নেতা গ্রেফতারও হন। তখনই অভিযোগের আঙুল ওঠে তৎকালীন টিএমসিপি রাজ্য সভাপতি জয়া দত্তর দিকে। কাল বিলম্ব না করে জয়াকে সরিয়ে দেন মমতা।
এরপর চলতি মাসের শুরুতে যখন আজকের সমাবেশের প্রস্তুতি সভা হয় তখনও জয়াকে কার্যত সাইডলাইনে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। গত একুশে জুলাইয়ের সমাবেশ মঞ্চে উঠতে গেলেও নিরাপত্তারক্ষীরা আটকে দেন জয়াকে। পরে অবশ্য অন্য এক শীর্ষ নেতাকে ফোন করে মঞ্চে ওঠার ছাড়পত্র পান জয়া। প্রথমে অনেকেই মনে করেছিলেন ২৮ অগস্টের আগেই নতুন সভাপতির নাম ঘোষণা করে দেবে দল। কিন্তু যত সময় এগিয়েছে ততই বোঝা গিয়েছে অনেক ভাবনা চিন্তা করেই পরবর্তী সভাপতি নির্বাচন করবে তৃণমূল। কারণ সামনেই উনিশের ভোট।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেও ছাত্র আন্দোলন করেই রাজনীতি এসেছেন। তিনি জানেন দলের মূল সমস্যা কী। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, জেলা থেকে আসা ছাত্র নেতাদের বার্তা দিতেই তাই মমতা এ দিন বলেন, ‘লবি করার দরকার নেই। কাজ করলে এমনিই মানুষ তোমায় চিনবে। বেশি লোভ করা উচিত নয়। লোভে পাপ, পাপে মৃত্যু। এই পতাকার দায়িত্ব অনেক বেশি। আমি নিঃস্বার্থ কর্মী চাই। যাঁরা টাকার কাছে আত্মসমর্পণ করবেন না।’
এ দিনের সমাবেশ থেকে মমতা এ-ও স্পষ্ট করেছেন ইউনিট এবং জেলা কমিটিগুলি যেমন ছিল তেমনই থাকবে। শুধু রাজ্য কমিটি তৈরি হবে আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে। এখন দেখার অপসারিত জয়ার কুর্সিতে কে আসেন। লগ্নজিতা নাকি অন্য কেউ।
Be the first to comment