আবার বিঘ্নিত হল প্রতিবেশীর সহাবস্থান। ঝাড়খণ্ডের পর এ বার বাংলার সঙ্গে সংঘাতে জড়ালো ওড়িশা। ঝাড়খণ্ডে বিজেপি শাসন হলেও ওড়িশার বিজু জনতা সরকারের সঙ্গে এ রাজ্যের তেমন কোনও অ-ভাবের ছবি এ পর্যন্ত নজরে আসেনি।
দিঘার কাছে উদয়পুরে ওড়িশা সীমানায় একটি পথ নির্দেশিকা বোর্ড ছিল রাজ্যের। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই সেটি বসানো হয়েছিল বলে জানা গেছে। বিশ্ব বাংলার লোগোও লাগানো ছিল সেই বোর্ডে। মঙ্গলবার সাত সকালে সেখানে উপস্থিত হয় ওড়িশার বিশাল পুলিশ বাহিনী। এরপর জোর করে ক্রেন দিয়ে ভেঙে দেওয়া হয় বোর্ডটি। ঘটনার সময় দিঘা পুলিশ বাধা দিলেও তারা কানে তোলেনি বলে জেলা প্রশাসনের অভিযোগ।
মাস তিনেক আগে উদয়পুরে বাংলার জমিতেই ওই পথ নির্দেশিকা বোর্ড লাগানো হয়েছিল বলে পূর্ব মেদিনীপুর জেলা প্রশাসনের দাবি। তখন কোনও আপত্তিও তোলা হয়নি। এরপর আকস্মিক ভাবেই আজ সকাল সাড়ে দশটা নাগাদ উদয়পুরে এসে ওই বোর্ড ভেঙে দেয় ওড়িশা প্রশাসন। তারা দাবি করে, দুটি স্তম্ভ বাংলার জমিতে থাকলেও মাটি থেকে উঁচুতে থাকা বোর্ড নাকি ছিল ওড়িশার এলাকার মধ্যে। তাই এ দিন ওই পথ নির্দেশিকা বোর্ড ভেঙে দেওয়া হয়।
খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান রামনগরের বিডিও অনুপম বাগ, কাঁথির মহকুমা শাসক শুভময় ভট্টাচার্য ও মহকুমা পুলিশ আধিকারিক পার্থ ঘোষ। অনুপমবাবু জানান, আলোচনা করে বিষয়টি সমাধান করতে চেয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু কোনও সময়ই দেওয়া হয়নি তাঁদের। নেহাত মামুলি একটা বিষয়কে ইচ্ছে করে বড় করা হল বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ঘটনায় বিস্মিত আশেপাশের বাসিন্দারাও।
এ মাসেরই গোড়াতেই ময়ূরাক্ষী নদীর উপর ম্যাসাঞ্জোর ( মশানজোড় ) বাঁধ নীল-সাদা করতে গেলে বাধা দেয় ঝাড়খণ্ড। বিজেপি-র দুমকা জেলার নেতারা নিজেদের মধ্যে বৈঠক করে সেচ দফতরের অ্যাসিসট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ারকে জানান নীল সাদা রঙে তাঁদের আপত্তি রয়েছে। ঝাড়খণ্ডের দুমকায় অবস্থিত হলেও ম্যাসাঞ্জোর বাঁধের রক্ষণাবেক্ষণ থেকে শুরু করে জল ছাড়া সবই পশ্চিমবঙ্গ সরকারের সেচ দফতরের অধীন। বাঁধের উপর পশ্চিমবঙ্গ সেচ দফতরের একটি বোর্ড ছিল, সেটি খুলে ঝাড়খণ্ডের একটা বোর্ডও রাতারাতি লাগিয়ে দেওয়া হয়। তৈরি হয় সংঘাতের ক্ষেত্র। সেই সমস্যার সমাধান হয়নি এখনও।
উদয়পুরে পথ নির্দেশিকা বোর্ড ভাঙা প্রসঙ্গে তৃণমূলের জেলা সাধারণ সম্পাদক কণিষ্ক পাণ্ডা বলেন, “দিঘায় শুধু বাংলার লোক নয়, গোটা ভারত থেকে লোক আসে। কাজেই এই পথ নির্দেশিকা থাকলে সবার সুবিধা। এবং ওড়িশা সরকারেরও দায়বদ্ধতা আছে। আজ ওরা যেটা করেছে তা সম্পূর্ণ বেআইনি । কোনও অসুবিধা থাকলে জানাতে পারতো।” বিষয়টি নিয়ে দিঘা থানায় বৈঠকে বসেছেন জেলা প্রশাসনের কর্তারা।
Be the first to comment