মঙ্গলবার ঘুম ভেঙে ক্ষত-বিক্ষত লাশ দেখেছিল ঝাড়গ্রাম। মোরাম রাস্তার ধারে পড়েছিল তৃণমূলের দীর্ঘদিনের স্থানীয় নেতা চন্দন ষড়ঙ্গীর দেহ। সোমবার রাত থেকে নিখোঁজ থাকার পর মঙ্গলবার সকালে তাঁর দেহ দেখতে পান গ্রামবাসীরা। বিকেলেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে নিহত তৃণমূলকর্মী চন্দন ষড়ঙ্গীর বাড়িতে গেলেন পরিবহণ ও পরিবেশমন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এবং দলের মহাসচিব তথা শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়।
নিহত তৃণমূলকর্মী চন্দনকে অনেক দিন ধরে চেনেন বলে এ দিন মেয়ো রোডে টিএমসিপি-র সমাবেশ মঞ্চেই বলেন মুখ্যমন্ত্রী। এ দিনের সমাবেশ থেকে মুখ্যমন্ত্রী হিংসার রাজনীতি নিয়ে এক যোগে সিপিএম এবং বিজেপি-র বিরুদ্ধে তোপ দাগেন। মঙ্গলবার বিকেলেই চন্দন খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছে সিপিএমের দুবরা এরিয়া কমিটির সদস্য তাপস মল্লিককে। রাজ্যের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী বলেন, “ঝাড়খণ্ড থেকে বাইরের লোক ঢুকছে, তারাই এসব কাজ করেছে। এই খুনের ঘটনায় ইতিমধ্যেই সিপিএমের একজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।”
প্রসঙ্গত, চন্দনবাবুদের বর্তমান বাড়ি ঝাড়গ্রাম শহরে। আগে তাঁরা থাকতেন দুবরাতে। অভিযোগ, ২০০২ সালে সিপিএমের গুণ্ডাবাহিনী চন্দনের বাবা মোহিনীমোহন ষড়ঙ্গীকে বাড়ির ভিতর পুড়িয়ে হত্যা করেছিল। তারপরেই গোটা পরিবার কার্যত উৎখাত হয়ে ভিটে ছেড়ে এসে ঝাড়গ্রামে থাকতে শুরু করেন। চন্দন খুনে ধৃত তাপস মল্লিক তাঁর বাবার খুনেও অভিযুক্ত ছিলেন বলে জানা গিয়েছে।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় পৌঁছনোর বেশ খানিকটা আগেই ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে পৌঁছন শুভেন্দু। সুপারের ঘরে নিজেদের মধ্যে একটি বৈঠকও করেন মন্ত্রী। উপস্থিত ছিলেন ঝাড়গ্রামের পুলিশ সুপার অমিত কুমার ভরত রাঠোর, জেলা শাসক আয়েশারানি এ, বিধায়ক সুকুমার হাঁসদা, দলের যুবনেতা দেবনাথ হাঁসদা এবং ঝাড়গ্রাম পুরসভার চেয়ারম্যান দুর্গেশ মল্লবর্মন। শাসক দলের তরফে জানানো হয়েছে নিহত চন্দনের স্মরণসভাও হবে।
একদা মেদিনীপুরের লাল সন্ত্রাসের নায়ক দীপক সরকার, সুশান্ত ঘোষদের বাহিনীর দ্বারা ২০০২ সালে দুবরা থেকে উৎখাত হলেও তৃণমূলের সাংগঠনিক কাজের জন্য রোজ ঝাড়গ্রাম থেকে বেশ খানিকটা দূরে সেখানে যেতেন চন্দন। মোটর সাইকেল চালিয়েই যাতায়াত করতেন তিনি। সোমবার রাতে ফেরার সময়ই কুপিয়ে হতযা করা হয় তাঁকে।
Be the first to comment