সুপ্রিম কোর্টের রায়ে গৃহবন্দী ৫ সমাজকর্মী

Spread the love
মঙ্গলবার দেশের নানা প্রান্তে হানা দিয়ে পাঁচ বুদ্ধিজীবীকে গ্রেফতার করেছিল পুনে পুলিশ। অভিযোগ, তাঁরা মাওবাদীদের সমর্থক। কিন্তু বুধবার সুপ্রিম কোর্ট স্পষ্ট বলল, তাঁদের পুলিশ হেপাজতে রাখা যাবে না।  বড় জোর গৃহবন্দী করে রাখা যেতে পারে। সরকারের সমালোচনা করে বিচারপতি ওয়াই বি চন্দ্রচূড় বলেছেন, মনে হচ্ছে সরকার সব বিরোধিতা স্তব্ধ করে দিতে চায়। এই মামলায় ফের শুনানি হবে আগামী সপ্তাহের বৃহস্পতিবার।
মঙ্গলবার যাঁরা ধরা পড়েছেন, তাঁরা হলেন মাওবাদী তাত্ত্বিক ভারভারা রাও, আইনজীবী সুধা ভরদ্বাজ, সমাজকর্মী অরুণ ফেরেইরা, গৌতম নাওলাখা ও ভার্নন গঞ্জালভেস।  এই ধরপাকড়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছিলেন ইতিহাসবিদ রোমিলা থাপার, বামপন্থী বুদ্ধিজীবী প্রভাত পট্টনায়ক, সতীশ দেশপাণ্ডে, মায়া দারুওয়ালা প্রমুখ। বুধবার বিকাল সাড়ে চারটেয় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের নেতৃত্বে এক বেঞ্চ সেই আবেদন শোনে।  তখনই বিচারপতিরা ধৃতদের পুলিশ কাস্টডিতে নিতে নিষেধ করেন।
এতদিন শোনা গিয়েছিল, ভারভারা রাও সহ ধৃত পাঁচ বুদ্ধিজীবী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে খুনের ষড়যন্ত্রে যুক্ত। দেশ জোড়া প্রতিবাদের মুখে পুনে পুলিশ জানাল, এছাড়া আরও গুরুতর অভিযোগ আছে তাঁদের বিরুদ্ধে। গ্রেফতার করার আগে পুলিশ সাতদিন ধরে গোপনে তাঁদের ওপরে নজর রেখেছিল। তাতেই ধৃতদের বিরুদ্ধে আরও তথ্যপ্রমাণ পাওয়া গিয়েছে। মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের কাছে পেশও করা হয়েছে সেই প্রমাণ।
কীসের প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে?
সেকথা স্পষ্ট করে বলছে না পুলিশ। প্রধানমন্ত্রীকে ‘খুনের চক্রান্ত ‘ নিয়েও নতুন কিছু জানাতে পুলিশ অস্বীকার করেছে। তাদের বক্তব্যে ইতিমধ্যে কয়েকটি অসঙ্গতি খুঁজে পেয়েছেন পর্যবেক্ষকরা। পুলিশ আগে বলেছিল, ধৃতরা ভীমা-কোঁরেগাওঁ অঞ্চলে হিংসায় জড়িত ছিলেন। [পরে বলেছে, তাঁরা কীভাবে ভীমা-কোরেগাওঁ অঞ্চলে হিংসায় উস্কানি দিয়েছেন খতিয়ে দেখতে হবে।
পুলিশ জানিয়েছে, ধৃতরা দেশের ৩৫ টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। তাদের প্রভাবিত করে মাওবাদী আন্দোলনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।  বেশ কয়েকজন প্রফেসরের সঙ্গেও তাঁদের যোগাযোগ আছে। ফেসবুকে ও হোয়াটস্যাপ গ্রূপের মাধ্যমে তাঁরা  নিজেদের মধ্যে যোগাযোগ রাখেন।
গৌতম নওলাখার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, তিনি কাশ্মীরের নকশালপন্থীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। কিন্তু কাশ্মীরে নকশালপন্থীদের কোনও কার্যকলাপ আছে বলে জানা যায়নি।  সুধা ভরদ্বাজ ও অরুণ ফেরেইরার বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়েছে, তাঁরা প্রয়োজনে অনেককে আইনি সহায়তা দেন। কিন্তু কাকে আইনি সহায়তা দিয়েছেন পুলিশ বলেনি।তারা জানিয়েছে, ধৃতরা নিজেদের মধ্যে কোড ল্যাঙ্গুয়েজে কথা বলত। শুধু বুদ্ধিজীবীদের নয়, তাঁদের আত্মীয়স্বজনের ল্যাপটপ ও মোবাইল বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*