যাদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা বিতর্কে নয়া মোড়, সব বিষয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়েই এবার হবে তদন্ত

Spread the love
যাদপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রবেশিকা বিতর্কে নয়া মোড়। শুধু ইতিহাস নয় সব বিষয়ের প্রবেশিকা পরীক্ষা নিয়েই এ বার হবে তদন্ত। এমনটাই জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যেই তৈরি হয়েছে তদন্ত কমিটি। সূত্রের খবর, এই কমিটিতে রয়েছেন কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেমিস্ট্রি বিভাগের অধ্যাপক আশুতোষ ঘোষ। থাকবেন একজন প্রাক্তন বিচারপতিও। যদিও জানা গিয়েছে, এখনও এই বিচারপতির নাম ঠিক হয়নি। কিন্তু হঠাৎ কেন এমন সিদ্ধান্ত নিল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়? শাসক দলের চাপে পড়েই কি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়, এখন সেই প্রশ্নই ঘুরছে বিভিন্ন মহলে।
দীর্ঘ লড়াই এবং অনশনের পরে আর্টস ফ্যাকাল্টির ছ’টি বিভাগে প্রবেশিকা পরীক্ষার সিদ্ধান্ত ফিরিয়ে আনতে সফল হয়েছিলেন যাদবপুরের ছাত্রছাত্রীরা। সেই মতো শুরুও হয় ভর্তি প্রক্রিয়া। কিন্তু অভিযোগ উঠেছিল সেই ভর্তি পদ্ধতিতেই নাকি অস্বচ্ছতা রয়েছে। ইতিহাস বিভাগের মেধাতালিকা প্রকাশের পরেই এই অভিযোগ সামনে আসে। অভিযোগ উঠেছে, উচ্চমাধ্যমিকে ৯৫ শতাংশ বা তার বেশি নম্বর পাওয়া ১০০ জনেরও বেশি পড়ুয়া প্রবেশিকায় দশেরও কম নম্বর পেয়েছেন। অভিযোগ, ২১৬ জনের মেধাতালিকায় ১২০ জনের সঙ্গেই এমন হয়েছে। কর্তৃপক্ষের দাবি, এ বিষয়ে ‘অভিযোগ’ পেয়েছেন তাঁরা। তাই অ্যাডমিশন কমিটির বৈঠক ডাকা হয়। সিদ্ধান্ত হয়, ইতিহাসের প্রবেশিকা পরীক্ষার উত্তরপত্রগুলি আবার মূল্যায়ন করা হবে। এবং বাকি পাঁচটি বিষয়েও সমস্ত খাতার নম্বর পুনরায় যোগ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
এই ঘটনার পরেই ইতিহাস বিভাগ নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কর্তৃপক্ষ৷ অভিযোগ তোলেন, প্রশ্নপত্রের সব ক’টি উত্তর না লিখলে সেই খাতা দেখেননি ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপকেরা। ফলে বহু পড়ুয়ার বিস্ময়জনক ভাবে কম নম্বর এসেছে মেধাতালিকায়। অন্যদিকে, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষকেরা জানাচ্ছেন, খাতা দেখার পদ্ধতি কী হবে, সেই সংক্রান্ত কোনও নতুন নির্দেশ তাঁদের কাছে ছিলই না। ফলে, এত বছর ধরে তাঁরা যে ভাবে প্রবেশিকা পরীক্ষার খাতা দেখেছেন, সে ভাবেই দেখা হয়েছে এই বছরও। এমনকী স্বচ্ছতা নিয়ে যাতে কোনও প্রশ্ন না ওঠে, তা নিশ্চিত করতে এই বছর কোনও অধ্যাপক খাতা নিয়ে যাননি বাড়িতে। ক্লাসের শেষে অতিরিক্ত সময় বিভাগে থেকেই সময়ে শেষ করেছেন ৩৪৪টি খাতা দেখা। নির্দিষ্ট সময়ে বার করেছেন মেধাতালিকাও। কিন্তু তার পরেও তাতে কোনও অসঙ্গতি রয়েছে, এমন অভিযোগ তাঁদের কাছে আসেনি। কোনও পড়ুয়া কম নম্বর পাওয়ার অভিযোগ তুলেছে বলেও জানা যায়নি। তাঁদের দাবি, তাঁরা আচমকাই নোটিস মারফত জেনেছেন, যে আবার খাতা দেখা হবে।
কিন্তু এখানেই শেষ নয়। তালিকায় রয়েছে আরও বিতর্ক। আগের মেধাতালিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠার পর সব খতিয়ে দেখে নতুন মেধাতালিকা প্রকাশ করার সিদ্ধান্ত নেয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু দেখা গিয়েছে, নতুন মেধাতালিকায় নাম পরিবর্তন হয়েছে ১৫ জনের। প্রথম মেধাতালিকায় মাত্র ছয় নম্বর পাওয়া বেশ কয়েকজনের নম্বর নতুন তালিকায় বেড়ে হয়েছে ৩২। প্রথমবার মেধাতালিকা প্রকাশের পর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অভিযোগ করেছিলেন, প্রশ্নপত্রের সব ক’টি উত্তর না লিখলে সেই খাতা দেখেননি ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপকেরা। ফলে বহু পড়ুয়ার বিস্ময়জনক ভাবে কম নম্বর এসেছে মেধাতালিকায়। তবে সেই সময় যাদবপুরের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপকরা অনেকেই মেধাতালিকার পূনর্মূল্যায়নের বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন। কিন্তু পরের বার মেধাতালিকায় প্রাপ্ত নম্বরে এত ফারাক দেখে প্রশ্ন তুলছিলেন অনেকেই।
এর মধ্যেই প্রকাশ্যে এল নতুন খবর। ইতিহাস ছাড়া বাকি বিভাগেও তদন্ত হওয়ার খবরে এখন জল্পনা শুরু হয়েছে সংশ্লিষ্ট মহলে।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*