গর্ভবতী স্ত্রীর চিকিৎসার জন্য টাকার প্রয়োজন। কিন্তু সেই টাকা জোগাড় করতে পারেননি স্বামী। শেষে নিজের ৪ বছরের মেয়েকেই বিক্রি করতে গিয়েছিলেন বাবা। তবে পুলিশের হস্তক্ষেপে শেষ পর্যন্ত অঘটন এড়ানো গিয়েছে।
কনৌজের বাসিন্দা অরবিন্দ বানজারা। সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রীকে ভর্তি করেছিলেন জেলা হাসপাতালে। তাঁর প্রেগন্যান্সিতে দেখা গিয়েছিল কিছু জটিলতা। চিকিৎসকরা অরবিন্দকে বলেন রক্ত জোগাড় করতে হবে। কিন্তু টাকা আসবে কোথা থেকে। অনটনের সংসারে পকেটে তো টান পড়েছে অনেক আগেই। অগত্যা উপায় না দেখে নিজের ৪ বছরের মেয়েকেই বিক্রি করতে গিয়েছিলেন অরবিন্দ। তাও মাত্র ২৫হাজার টাকার বিনিময়ে। পুলিশ জানিয়েছে অরবিন্দ এবং তাঁর স্ত্রী সুখদেবীর প্রথম সন্তান চার বছরের রোশনি। তাঁদের এক বছরের একটি ছেলেও রয়েছে। নাম জানু।
নিউজ এজেন্সি এএনআই-কে অরবিন্দ বানজারা জানিয়েছেন, “জেলা হাসপাতালের চিকিৎসকরা আমায় বলেন রক্তের জোগাড় না হলে আমার স্ত্রী মারা যাবেন। আমার কাছে টাকা ছিল না। কোনও উপায় ও ছিল না টাকা জোগাড় করার। কোনও পথ না পেয়েই শেষ পর্যন্ত নিজের মেয়েকে বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিই আমি।” অরবিন্দের স্ত্রী সুখদেবী জানিয়েছেন, “নিজের সন্তানকে বিক্রি করা সহজ কাজ নয়। কিন্তু কী করব আমরা? আমাদের কাছে তো আর কোনও উপায় ছিল না। এর আগেও বেশ কিছু হাসপাতালে আমায় ভর্তি হতে হয়েছে। সেখানেও অনেক খরচ হয়েছে।”
তবে গোটা ঘটনা কোনওভাবে পৌঁছয় পুলিশের কানে। না তাঁরা এই দম্পতিকে গ্রেফতার করেননি। বরং আর্থিক ভাবে সবরকম সাহায্য করেছেন। তিরওয়া থানার অফিসার আমোদ কুমার সিং জানিয়েছেন, “স্থানীয়দের থেকে আমরা জানতে পারি যে এক দম্পতির চিকিৎসার জন্য টাকা দরকার। তাঁরা খুব সমস্যায় আছে। এরপর আমরা জানতে পারি যে ওই ভদ্রমহিলার রক্তের প্রয়োজন। আর সেই জন্য দরকার টাকার। আমরা জানতে পারি ওঁদের অবস্থা এতটাই খারাপ যে টাকা জোগাড়ের জন্য নিজেদের মেয়েকে বিক্রি করতে যাচ্ছেন। এর পরেই থানার সবাই সিদ্ধান্ত নিই যে ওঁদের আর্থিক ভাবে সবরকম সাহায্য আমরা করব।” অফিসার আরও জানিয়েছেন, “গোটা বিষয়টার আমরা দেখভাল করছি। টাকা নয়। প্রয়োজনে রক্তও দেব আমরা।”
Be the first to comment