অ্যাথলিটরা বিশ্ব মঞ্চে বা জাতীয় স্তরে প্রচুর ঘাম ঝরিয়ে পদক জেতেন ৷ কিন্তু তারপরেও অনেক অ্যাথলিট রয়েছেন, যাঁদের ভাগ্যে কিছুই জোটে না ৷ এমনই এক প্যারা অ্যাথলিট মধ্যপ্রদেশের মনমোহন সিং লোধি ৷ জাতীয় স্তরে সাফল্য পাওয়ার পর মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহান-সহ একাধিক মানুষের কাছে প্রতিশ্রুতি ছাড়া আর কিছুই পাননি তিনি ৷ শেষপর্যন্ত নিজের জেতা পদকগুলি গলায় ঝুলিয়ে নেমে পড়েছেন রাস্তায় ভিক্ষা করতে !
মধ্যপ্রদেশের নরসিংপুরের এই প্যারা অ্যাথলিট মনমোহন জাতীয় স্তরে রেসে একাধিক পদক জিতেছেন। সংবাদসংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, ‘‘ জাতীয় স্তরে যখন পদক জিতেছিলাম তখন সরকারের পক্ষ থেকে বহু প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল। এমনকী, সরকারি চাকরি দেওয়ার কথাও বলা হয়েছিল। কিন্তু তারপর সবই যেন হাওয়ায় মিলিয়ে গিয়েছে। কিছুই পাইনি আমি ৷ ’
জিএসটি ও নোটবন্দির পর থেকেই ভারতে ব্যাপক চাপে পড়ে গিয়েছেন ছোট ব্যবসায়ীরা৷ যার নির্যাস, ছোট ব্যবসায়িক ঋণখেলাপির পরিমাণ গত বছরের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে গিয়েছে৷ ২০১৭ সালের মার্চে ছোট ব্যবসায় খেলাপি ঋণের পরিমাণ যেখানে ছিল ৮ হাজার ২৪৯ কোটি টাকা, ২০১৮ সালের মার্চে সেই অঙ্কটা দাঁড়িয়েছে ১৬ হাজার ১১৮ কোটি টাকা৷
মনমোহনের কাছে এখন আর তাই রাস্তায় নেমে ভিক্ষা করা ছাড়া আর কোনও উপায় নেই ৷ পদক জেতার পর হয়তো কিছু সংবর্ধনা পেয়েছেন ৷ কিন্তু পাননি কোনও অর্থসাহায্য ৷ জীবন চালানোই এখন কঠিন হয়ে পড়েছে এই প্যারা অ্যাথলিটের কাছে ৷ সংবাদ সংস্থাকে তিনি বলেন, ‘‘ আমার আর্থিক অবস্থা অত্যন্ত খারাপ। খেলার জন্য টাকা চাই। সংসার চালানোর জন্য টাকা চাই। মুখ্যমন্ত্রী যদি পাশে না দাঁড়ান তাহলে রাস্তায় ভিক্ষা করেই জীবন চালাব।’’
সম্প্রতি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস-এর একটি আরটিআই আবেদনে প্রকাশিত হয়েছে এই তথ্য৷ রিজার্ভ ব্যাঙ্ক জানিয়েছে, ক্ষুদ্র ব্যবসায়িক ঋণের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির অনাদায়ী ঋণের পরিমাণ বাড়ছে লাফিয়ে৷ এর একমাত্র কারণ হিসেবে আরবিআই জানাচ্ছে, জিএসটি ও বিমুদ্রাকরণ৷
আরবিআই-এর মনিটারি পলিসি ডিপার্টমেন্টের একটি বিবৃতিতে বলা হচ্ছে, ‘বিশেষ করে, স্বর্ণ ও রত্ন শিল্পে ঠিকা শ্রমিকরা পারিশ্রমিক নিয়মিত পাচ্ছেন না নোটবন্দির পর থেকে৷ জিএসটি চালু হওয়ায় বহু ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প করের আওতায় চলে আসায়, তাদের খরচ বেড়েছে৷ ফলে সেই ধাক্কা সামলে উঠতে পারছে না৷’
দেখা যাচ্ছে, নোটবন্দির আগে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যের ছোট জেলাগুলির আর্থিক ভাবে যে উন্নতি ঘটছিল, তা ধাক্কা খেয়েছে৷ ব্যবসা ধুঁকছে৷
Be the first to comment