চিটফান্ড কাণ্ডে ফের সক্রিয় হয়ে উঠল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। সোমবার ডেকে পাঠানো হলো তৃণমূলের প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ তথা সারদা কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত কুণাল ঘোষকে। সল্টলেকের সিজিও কমপ্লেক্সে কুণালকে জেরা করছেন কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকরা।
সারদা গোষ্ঠীর মিডিয়া সাম্রাজ্যের মাথা ছিলেন কুণাল। খবরের কাগজ থেকে টিভি চ্যানেল, একাধিক সংস্থার শেষ কথা ছিলেন প্রাক্তন রাজ্যসভার সাংসদ। চিটফান্ড কেলেঙ্কারিতে বেশ কয়েক বছর জেলেও থাকতে হয় তাঁকে। আপাতত তিনি জামিনে মুক্ত। কিন্তু একাধিক শর্তে জামিনে রয়েছেন তিনি। সোমবার সেই কুণাল ঘোষকেই ডেকে পাঠিয়ে জেরা করছেন সিবিআই আধিকারিকরা।
দু’দিন আগেই কুণাল মুখ খুলেছিলেন এক সময়ের বিধাননগর কমিশনারেটের গোয়েন্দা প্রধান তথা বর্তমান মালদার পুলিশ সুপার অর্ণব ঘোষের বিরুদ্ধে। পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠন নিয়ে মানিকচকের হিংসাকে কেন্দ্র করে পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে ব্যাপক ক্ষোভ উগরে দেন কুণাল। বলেন, “কে মারছে, কাকে মারছে এগুলি রাজনৈতিক চাপানউতোরের বিষয়। কিন্তু অস্ত্র এল কোথা থেকে? পুলিশ কি আঙুল চুষছিল? মানিকচকে ধারাবাহিক হিংসা চলছে। এত অস্ত্র। কেন অর্ণব ঘোষকে বেঁধে রাখা হবে না? কেন অর্ণব ঘোষের মেডেল খুলে নেওয়া হবে না।” সারদা কাণ্ডে অভিযোগের আঙুল উঠেছিল আইপিএস অর্ণব ঘোষের দিকেও। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে তথ্যপ্রমাণ দেওয়ার ক্ষেত্রে অসহযোগিতার অভিযোগ উঠেছিল তাঁর বিরুদ্ধে। কাকতালীয় হলেও সত্যি, অর্ণবের বিরুদ্ধে মুখ খোলার ৭২ ঘণ্টা পেরনোর আগেই সিবিআই ডেকে পাঠাল কুণালকে।
প্রসঙ্গত, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সহ রাজ্যের শাসক দলের নেতারা প্রায়ই বলেন, ভোট এগিয়ে এলেই সক্রিয় হয়ে ওঠে সিবিআই, ইডি’র মতো সংস্থা। গত ২৮ অগস্ট তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সমাবেশ থেকে এ নিয়ে বিজেপি’র বিরুদ্ধে তীব্র আক্রমণ শানিয়েছিলেন মমতা। বললেন, উনিশের ভোট আসছে। তাই লাফালাফি বেড়ে গেছে। ইনকা খিলাফ সিবিআই করনা হ্যায়, উনকে খিলাফ সিবিআই করনা হ্যায়! এর পরই হুমকির সুরে মমতা বলেন, “এ ভাবে ধমকে চমকে লাভ নেই! আমরাও বুঝে নেব ইঞ্চিতে ইঞ্চিতে”। তাঁর কথায়, “সারদা-র যখন জন্ম হয়েছে, তখন তৃণমূল জন্মায়নি। বামেদের সময় চিটফান্ডের বাড়বাড়ন্ত হয়েছে। আমাদের সময়ে নয়। চিটফান্ডের টাকা তৃণমূলের দরকার নেই।” ইতিমধ্যেই কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তলব করেছে বলে জানা গিয়েছে। শাসক দলের অনেকেরই আশঙ্কা, যত ভোট এগিয়ে আসবে তত বিজেপি কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলিকে লেলিয়ে দেবে। এ দিনের কুণালকে তলব শাসকের সেই আশঙ্কাকে বেশ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দিল বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহলের অনেকে।
Be the first to comment