প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর চিতাভস্ম ভাসানোর প্রক্রিয়া চলেছে গোটা দেশ জুড়েই। অস্থিকলস হাতে নিয়ে কেউ হাসতে হাসতে পোজ দিচ্ছেন, কেউ বা কলস ফেলছেন নদীর জলে, আবার কেউ কেউ নদীতে অস্থি ভাসাতে গিয়ে নৌকা উল্টে জলে ডিগবাজি খাচ্ছেন। বাজপেয়ীজির চিতাভস্ম নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে, যখন এমন রব উঠছে চারদিকে, সেই সময়েই নতুন একটি ঘটনা ফের উস্কে দিয়েছে বিতর্ক।
খবর ছড়িয়েছে, আসল চিতাভস্ম সমেত তামার অস্থিকলস নাকি বিক্রি হচ্ছে অনলাইন ই-কমার্স সংস্থা আমাজন-এ। একই সঙ্গে পাওয়া যাচ্ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সাফল্যের কাহিনী নিয়ে প্রকাশিত একটি বই। দু’টোই পাওয়া যাচ্ছে ১০ শতাংশ ছাড়ে। প্রাক্তন এবং বর্তমানকে একই সঙ্গে এই রকম অভিনব প্রয়াসে জুড়ে দিয়েছে আমাজন, সেটা দেখে প্রথমে চমকে যান অনেকেই। পোস্টটি ভাইরাল হওয়া শুরু হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়। আমজনতা থেকে বিজেপির নেতা-মন্ত্রী অনেকেই শেয়ার করতে শুরু করেন এই পোস্ট।
সম্প্রতি বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়ার মুখ দেবেন্দ্র জারারিয়া এই পোস্টটি তাঁর টুইটার হ্যান্ডেলে শেয়ার করে লেখেন, “খুবই দুঃখের বিষয়। বাজপেয়ীজির চিতাভস্ম নিয়ে রাজনীতি করা বন্ধ করুন” আরও অনেকেই পোস্টটি শেয়ার করে একই কথা লেখেন।
দেবেন্দ্র জায়ারিয়া সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাঁর টুইটের পরেই রিটুইট করে ‘ইয়ো ইয়ো মোদী’ নামের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে উত্তর আসে, সবটাই ভুয়ো। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ওই অ্যাকাউন্ট থেকেই গত ২৫ অগস্ট পোস্টটি টুইটারে ছাড়া হয়েছিল। সঙ্গে অস্থিকলস, বাজপেয়ীজি এবং মোদীর একটি ফটোশপ করা ছবি। সেখান থেকেই পোস্টটি ভাইরাল হয়ে ছেয়ে যায় গোটা নেট দুনিয়ায়।
টুইটারে এই পোস্টটি ভাইরাল হয় দু’ভাবে। একটি ফটোশপ করা ছবির সঙ্গে পোস্ট এবং দ্বিতীয়টি ভিউয়ারদের মতামত। তা ছাড়াও, আমাজন অফিসিয়াল সাইটের ছবির সঙ্গে অস্থিকলসের ছবি জুড়েও ছড়িয়ে দেওয়া হয় ইন্টারনেটে। অনেক ভিউয়াররাই জানান, আমাজনে সার্চ করেও এমন কোনও প্রোডাক্টের খোঁজ পাননি তাঁরা।
ইয়ো ইয়ো মোদী’ নামক অ্যাকাউন্ট থেকে ইতিমধ্যেই পোস্টটি ডিলিট করে দেওয়া হয়েছে। তবে, বিতর্ক এখানেই থামছে না। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর প্রয়াণের পর তাঁর চিতাভস্ম নিয়ে গোটা দেশজুড়েই যে হই চই শুরু হয়, সেটার ছিছিক্কারও কিছু কম হয়নি। শুধু বিরোধী শিবির নয়, বিতর্ক শুরু হয় খোদ বিজেপির অন্দরেই। নানা রকম মিমে ছেয়ে যায় সোশ্যাল মিডিয়া। এই ধরণের ভুয়ো পোস্ট আগেও মিডিয়ায় বহুবার দেখা গিয়েছে। তবে, কোনও পোস্টের সত্য-মিথ্যা যাচাই না করেই খোদ বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা এই ধরণের খবরকে আরও ছড়িয়ে দিয়েছেন সেটাই সবচেয়ে আশ্চর্যের।
Be the first to comment