খাবারের নুনে নাকি রয়েছে প্লাস্টিক, বম্বে আইআইটি-র দুই গবেষক তুলে ধরলেন এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য!

Spread the love
খাবারের নুনে নাকি রয়েছে প্লাস্টিক! বম্বে আইআইটি-র দুই গবেষক এই তথ্য জানিয়েছেন। ভাবতে পারছেন! যে বাহারি নুনের বাটিটা আপনার ডাইনিং টেবিলে শোভা পায় তাতে নাকি মিশে রয়েছে প্লাস্টিক। আর এতদিন ধরে আপনার অগোচরেই সেই বিষ প্রবেশ করেছে আপনার শরীরে।
তাঁদের দাবি, রান্নায় কিংবা খাবারের পাতে যে নুন আমরা রোজ ব্যবহার করে থাকি তার মধ্যে মিশে রয়েছে মাইক্রোপ্লাস্টিক। পরীক্ষা করা নুনের স্যাম্পেল থেকে ৬২৬টি মাইক্রোপ্লাস্টিক পার্টিকেলস পেয়েছেন বম্বে আইআইটি’র ওই দুই গবেষক। তাঁরা জানিয়েছেন, এই পার্টিকেলসের মধ্যে ৬৩ শতাংশ মাইক্রোপ্লাস্টিক থাকে গুঁড়ো আকারে। আর বাকি ৩৭ শতাংশ থাকে ফাইবার রূপে। এই গবেষণায় উঠে এসেছে আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য। প্রতি গ্রাম নুনের মধ্যে প্লাস্টিকের পরিমাণ ০.০৬৩ মিলিগ্রাম।
খাবার পাতে নুন খাওয়া অনেকেরই স্বভাব। অন্য রাজ্যে তেমনটা চোখে না পড়লেও বঙ্গে এ সংস্কৃতি বহু প্রাচীন। বলা ভালো বহু বাঙালি পদই আছে যার সঙ্গে কাঁচা নুন মিশিয়েই খেতে হয়। বম্বে আইআইটি’র ওই গবেষণা জানাচ্ছে, কোনও ভারতীয় যদি দিনে ৫ গ্রাম নুন খেয়ে থাকেন তাহলে এক বছরের তার শরীরে প্রবেশ করছে ০.১১৭ মিলিগ্রাম মাইক্রোপ্লাস্টিক।
২৫ অগস্ট একটি আন্তর্জাতিক জার্নাল Environmental Science and Pollution Research-এ এই গবেষণার রিপোর্ট প্রকাশ হয়েছে। সৌজন্যে বম্বে আইআইটি’র দুই গবেষক অমৃতাংশু শ্রীবাস্তব এবং চন্দন কৃষ্ণ শেঠ। “Contamination of Indian Sea Salts with Microplastics and a Potential Prevention Strategy” নামক ওই রিপোর্টে এই দুই গবেষক জানিয়েছেন, প্রতিদিন কীভাবে আমাদের শরীরে বিষ প্রবেশ করছে। বলা ভালো নামি-দামি ব্র্যান্ডের চোখ ধাঁধানো বিজ্ঞাপণের জৌলুসে দিনের পর দিন প্রতারিত হচ্ছেন মানুষ।
প্রফেসর শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, “ভারতবর্ষ বিশ্বের প্রথম তিনটি দেশের মধ্যে একটি দেশ যেখানে সবচেয়ে বেশি নুন উৎপাদন করা হয়। সেটা বাণিজ্যিক এবং ঘরোয়া দুই কাজেই ব্যবহার করা হয়। আর সেইজন্যেই এখন সময় এসেছে খতিয়ে দেখার যে এই নুনের মধ্যে কী কী উপাদান রয়েছে। আর সেই পরীক্ষা করতে গিয়েই নুনের মধ্যে মাইক্রোপ্লাস্টিকের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে।“
বম্বে আইআইটি’র আরেক আধিকারিক জানিয়েছেন, “সমুদ্রের জল থেকেই মূলত নুন তৈরি করা হয়। কিন্তু সমুদ্রে দিন দিন আবর্জনা ফেলার পরিমাণ বাড়ছে। আর এইসব আবর্জনা ফেলার সময় আমরা খেয়ালও করি না যে কী কী ফেলা হচ্ছে। আর নুনের মধ্যে প্লাস্টিকের সন্ধান পাওয়ার এটাই অন্যতম কারণ।“
তবে এই সমস্যার সমাধানও দিয়েছেন বম্বে আইআইটি’র গবেষকরা। প্রফেসর শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, ‘স্যান্ড ফিলট্রেশন’ পদ্ধতির মাধ্যমে নুনের মধ্যে থাকা মাইক্রোপ্লাস্টিকের পরিমাণ প্রায় ৮৫ শতাংশ পর্যন্ত কমিয়ে ফেলা সম্ভব।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*