ভেঙে পড়া ব্রিজের ধ্বংসাবশেষ থেকে জন্ম নিচ্ছে হাজারো প্রশ্ন

Spread the love
পোস্তার ভয়াবহ স্মৃতি এখনও টাটকা শহর কলকাতার। এর মধ্যেই মঙ্গলবার আরও একবার ব্রিজ ভাঙার ঘটনা ঘটে গিয়েছে শহরের বুকে। যুদ্ধকালীন তৎপরতায় চলা উদ্ধারকাজের সঙ্গেই ভেঙে পড়া ব্রিজের ধ্বংসাবশেষ থেকে জন্ম নিচ্ছে হাজারও প্রশ্ন।
প্রশাসনিক চাপানউতোর শুরু হয়েছিল মঙ্গলবার বিকেলের আলো থাকতেই। এ পক্ষ আঙুল তুলেছিল মেট্রোর দিকে, মেট্রো পাল্টা আঙুল তুলে দিয়েছিল পূর্ত দফতরের দিকে। এই চাপানউতোরের মধ্যেই উঠে আসছে নানান তথ্য।
গত ১৬ এপ্রিল ‘ই-টেন্ডার’ ডেকেছিল পূর্ত দফতরের বেহালা সাবডিভিশন। মাঝের হাট ব্রিজ, তারাতলা ফ্লাইওভার এবং ডায়মন্ডহারবার রোডের মোট ১৩-১৪ কিলোমিটার রাস্তা মেরামতির জন্য বরাদ্দ করা হয়েছিল ১৬ লক্ষ ১৮ হাজার ১৮১ টাকা। সেই টেন্ডারে এও বলা হয়েছিল যে, কাজ শুরু করতে হবে মে মাসে। কিন্তু টেন্ডারই সম্পূর্ণ হয়নি বলে জানা গিয়েছে। কাজই শুরু করতে পারেনি পূর্ত দফতর
এই টেন্ডারের বিষয়টি সামনে আসার পরই প্রশ্ন উঠছে, যখন পূর্ত দফতর টেন্ডার ডাকল মেরামতির, তার মানে তাদের কাছে এই বিষয়টি পরিষ্কার ছিল যে, ওই জায়গায় মেরামতির প্রয়োজন রয়েছে। শুধু মাঝেরহাট ব্রিজ নয়। ওই তালিকায় তারাতলা ফ্লাইওভার সহ ডায়মন্ড হারবার রোডের ১৩-১৪ কিলোমিটার রাস্তার মেরামতের কথাও উল্লেখ ছিল। বিশেষজ্ঞদের মতে ওই সময় কাজ শুরু হলে নিশ্চিতভাবেই খুঁটিনাটি বিষয়গুলি নজরে আসত এবং সাবধনতার রক্ষাকবচ পরানো যেত। কিন্তু তা হয়নি। আর সেই কারণেই প্রশ্ন উঠছে পূর্ত দফরের কাজে। ছ’মাস আগে আবার রাস্তার অংশকে ফিট সার্টিফিকেটও দিয়ে দিয়েছিল পিডব্লিউডি। প্রশ্ন উঠছে সেই সার্টিফিকেট নিয়েও।
মঙ্গলবারই দেখা গিয়েছিল ব্রিজের নীচের অংশ পরিণত হয়েছে ঘন জঙ্গলে। গাছ-গাছালিতে ঢাকা ব্রিজের একটা বড় অংশের কংক্রিট চোখেই পড়ছে না। স্থানীয়দের মতে, উপর থেকে দেখলেই বোঝা যায় এই ব্রিজের দিকে কারও নজরই ছিল না। এটা বোঝার জন্য বিরাট মাপের ইঞ্জিনিয়র হতে হয় না বলেও মন্তব্য করেন স্থানীয়দের অনেকে।
সড়ক যন্ত্রণা যেন অভিশপ্ত আকার ধারণ করেছে কলকাতায়। পোস্তার পর মাঝেরহাট। এখন নাগরিকদের একটাই প্রশ্ন, এ বার কি টনক নড়বে প্রশাসনের? নাকি এরপর আবার কোনও দুঃস্বপ্ন অপেক্ষা করে রয়েছে!

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*