জন্মাষ্টমীতে মন্দির সাজানো হয়েছিল নানা রঙের বেলুন দিয়ে। সেই বেলুনে হাত দিয়েছিল এক দলিত কিশোর। হাত দিতেই একটা বেলুন ফেটে যায়। এই অপরাধের জন্য বেঘোরে প্রাণটাই দিতে হলো ১২ বছরের ওই দলিত কিশোরকে।
পুলিশ সূত্রে খবর, গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে ওই কিশোরের। বাচ্চাটিকে যারা মেরেছে তারাও সবাই নাবালক, মৃত কিশোরেরই সমবয়সী। ঘটনাটি ঘটেছে আলিগড়ের নাদরোই গ্রামে। সেখানকার চামণ্ডা মন্দির সাজানো হয়েছিল জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে। সেখানেই গিয়েছিল মৃত কিশোর ও তার বন্ধু সূরজ। ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সে।
সূরজ জানিয়েছে, তার বন্ধু বেলুনে হাত দেওয়ার পর আচমকাই ফেটে যায় একটা বেলুন। আর তারপরেই ওই দলিত কিশোরকে বেধড়ক মারধর করতে শুরু করে পাঁচজনের একটি দল। একজন তার বন্ধুর হাত ধরে রেখেছিল। আর দু’জন ধরে রেখেছিল পা। বাকি দু’জন মিলে ক্রমাগত তার পেটে ঘুষি চালাতে থাকে। বন্ধুকে এ ভাবে মার খেতে দেখে সূরজ ছুটে ওই কিশোরের বাড়িতে গিয়ে তার মা’কে খবর দেয়।
মৃত কিশোরের এক তুতো ভাই চন্দ্রপাল জানিয়েছে, ছেলের মার খাওয়ার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে যান তার মা সাবিত্রী দেবী। ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনি দেখেন মাটিতে পড়ে রয়েছে তাঁর ছেলে। তৎক্ষণাৎ তাঁকে বাড়িতে নিয়ে আসা হয়। খবর দেওয়া হয় গ্রামের প্রধান শ্যামসুন্দর উপাধ্যায়কে। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, প্রাথমিক ভাবে বিষয়টিকে সেভাবে আমল দেননি গ্রাম প্রধান।
এরপরেই রাতের বেলায় পেটে ভয়ানক ব্যথা শুরু হয় ওই কিশোরের। তাকে নিয়ে প্রথমে স্থানীয় এক ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু সেখানে গিয়েও ব্যথা না কমায় আর একজন ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। ডাক্তারই কিশোরকে হাসপাতালে ভর্তি করতে বলেন। বুধবার সকাল ১১ টা নাগাদ ওই কিশোরকে আলিগড় জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাত সাড়ে ১২ টা নাগাদ সেখানেই মৃত্যু হয় ওই কিশোরের।
পুলিশ জানিয়েছে, পাঁচজন নাবালকের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪এ ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। কিশোরের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট হাতে এলে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
Be the first to comment