প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের মাথায় বসানো হতে পারে টিএমসিপি-র প্রাক্তন রাজ্যসভাপতি অশোক রুদ্রকে

Spread the love
তৃণমূল ছাত্র পরিষদের প্রতিষ্ঠা দিবসের সমাবেশ থেকেই তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছিলেন ১০-১৫ দিনের মধ্যে টিএমসিপি-র কমিটি গঠন করে দেওয়া হবে। ২৮ অগস্ট গান্ধীমূর্তির পাদদেশে সমাবেশের পর শনিবার ১১ দিনের মাথায় কমিটি গঠন হলেও হয়তো ফাঁকাই থাকবে টিএমসিপি-র রাজ্য সভাপতির পদ।
সমাবেশের দিন তৃণমূলের শীর্ষস্তরের নেতারাই বলাবলি করেছিলেন, টিএমসিপি-এর রাজ্যসভাপতি হচ্ছেন উত্তর চব্বিশ পরগণার বারাসত রাষ্ট্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব সামলানো তৃণাঙ্কুর ভট্টচার্য। ওই দিনের সমাবেশে যে তিনজন ছাত্র নেতা-নেত্রী মঞ্চে বক্তৃতা করেছিলেন, তার মধ্যে তৃণাঙ্কুর ছিলেন একজন। এমনকী, তৃণমূলের এক নেতা বলেন, তৃণাঙ্কুরকে এমন সময় বক্তৃতা করতে ওঠানো হয়, যে সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সমাবেশস্থলে পা রাখছেন এবং দিদিমণির কানে তৃণাঙ্কুরের বক্তৃতা পৌঁছে দেওয়ার জন্য ওই সময়কে বেছে দিয়েছিলেন স্বয়ং অভিষেকই। কারণ এরকমই একটি সভায় জয়ার বক্তৃতা পছন্দ হওয়ায় জয়াকে ওই পদে বসিয়েছিলেন মমতা নিজেই। এত কিছুর পরেও তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, শনিবার কমিটি গঠন হলেও হয়তো সভাপতিহীনই থেকে যাবে ছাত্রফ্রন্ট। কারণ মাথায় রয়েছে অন্য এক পোড় খাওয়া ছাত্রনেতার নাম।
কিন্তু তৃণাঙ্কুরের নাম এক প্রকার নিশ্চিত হয়ে যাওয়ার পরও কেন তাঁকে ওই দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে না?
তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, গত দশদিনে মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় এবং রাজ্যসভাপতি সুব্রত বক্সীর কাছে একাধিক ছাত্রনেতা দরবার করেছেন। কী তাঁদের বক্তব্য? জানা গিয়েছে বিভিন্ন জেলার ছাত্র নেতারা দলের দুই শীর্ষ নেতাকে তৃণাঙ্কুরকে সভাপতি না করার পিছনে বেশ কয়েকটি যুক্তি দিয়েছে।
কী সেই যুক্তি?
প্রথমত, তৃণাঙ্কুর জয়া শিবিরের নেতা। সূত্রের খবর, এই কারণে ওই ছাত্রনেতারা দলের উপরের সারির দুই নেতাকে বলেন, জয়াকে সরিয়ে তৃণাঙ্কুরকে বসালে আসলে সংগঠনের রিমোট থাকবে জয়ার হাতেই। দুই, ওই ছাত্রনেতারা এ-ও অভিযোগ করেন, তৃণাঙ্কুরের বেড়ে ওঠা নাকি সিপিএমের ছাত্র সংগঠন এসএফআই-তে। এবং তিনি নেতা হয়েছেন নৈহাটির বিধায়ক পার্থ ভৌমিকের হাত ধরে। দাঁতে দাঁত চেপে কলেজ গেটে রাজনীতি করার অভিজ্ঞতা ওঁর নেই। যদিও,এসএফআই নেতারা বলছেন, তৃণাঙ্কুর কখনও এসএফআই করেনি। উত্তর চব্বিশ পরগণার এক এসএফআই নেতার কথায়, “হালিশহরের বাসিন্দা তৃণাঙ্কুর নৈহাটি ঋষি বঙ্কিম কলেজের ডে বিভাগের ছাত্র ছিলেন। এমনি ভাল ছেলে। কিন্তু কখনও উনি এসএফআই করেননি।” যদিও তৃণমূলের একটি সূত্রের দাবি, দলের এক তাবড় নেতা এখনও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন নতুন কমিটিতে জয়াকে রাখার। রাজ্য সরকারের মন্ত্রী তথা দলের ওই নেতার কাছে যেন, ‘জয়া বিনা গীত নেহি।’
শনিবারের বৈঠক থেকে ছাত্র পরিষদের সভাপতি ঠিক না করলেও শিক্ষক সংগঠনের মাথায় বসানো হতে পারে প্রাক্তন এক ছাত্র নেতাকে। তৃণমূল সূত্রের খবর, প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের মাথায় বসানো হতে পারে, টিএমসিপি-র প্রাক্তন রাজ্যসভাপতি অশোক রুদ্রকে। বাম জমানায় পিটিটিআই আন্দোলনের নেতৃত্ব দেওয়ার সময়ই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নজরে পড়েন অশোক। পরে শঙ্কুদেব পণ্ডাকে টিএমসিপি-র সভাপতি পদ থেকে সরিয়ে সভাপতি করা হয় আসানসোলের অশোক রুদ্রকে। কিন্তু ২০১৬-র বিধানসভা ভোটের ফল বেরোনোর পরের দিনই অশোককে সরিয়ে ওই জায়গায় আনা হয় জয়াকে। কিন্তু গত দু’বছরের বেশি সময় কোনও কথা বলেননি অশোক। চুপচাপ থেকে দল করে গিয়েছেন। দলের লাইনের বাইরে যাননি। শঙ্কুর মতো এ দিক-ও দিক ছটফট করেননি। তৃণমূলের অনেকের মতে,দিদিমণির বাধ্য ছাত্র হওয়ার কারণেই এই পুরস্কার পেতে পারেন অশোক।

Be the first to comment

Leave a Reply

Your email address will not be published.


*