দাড়িভিটা স্কুলের প্রাক্তন ছাত্র ছিল সে। এখন ইসলামপুর কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র। স্কুলের সঙ্গে আর কোনও যোগাযোগ ছিল না। তাই আন্দোলনটা ঠিক কী নিয়ে অতশত জানারও প্রয়োজন পড়েনি। প্রতিদিনের মতোই এক ফাঁকে এসে স্কুলের সামনে নিজেদের মিষ্টির দোকান সামলাচ্ছিলেন বছর ২০র তরুণ। বৃহস্পতিবার বেলা গড়াতেই যখন রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে গোটা এলাকা, তখন তাড়াতাড়ি দোকান বন্ধ করে এলাকা ছাড়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। ছুটে আসা পুলিশের গুলি শরীর ভেদ করে ঢুকে যায়। উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে আজ ভোরে মৃত্যু হয় তাপস বর্মনের।
বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান ছিলেন ২০ বছরের তাপস। প্রতিদিন কলেজের ফাঁকে কিছুটা সময় বাবার মিষ্টির দোকান সামলাতেন তিনি। বৃহস্পতিবারও তার অন্যথা হয়নি। স্কুলে বিক্ষোভ শুরু হওয়ার পরেও দোকানেই বসে ছিলেন। কিন্তু দুপুর গড়াতেই যখন এলাকা তেতে ওঠে ,পুলিশের রণংদেহী রূপ দেখে আর বসে থাকার সাহস পাননি। তাড়াতাড়ি করে দোকান বন্ধ করছিলেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, এ সময়ই পুলিশের গুলিতে লুটিয়ে পড়েন তিনি।
প্রথমে ইসলামপুর হাসাপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাঁকে। অবস্থার অবনতি হওয়ায় পাঠানো হয় উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে। জানা গিয়েছে সেখানেও রাতভর অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় তাঁর। হাসপাতালের চিকিৎসকদের একটি টিম জরুরি অস্ত্রোপচার করেও অবস্থা সামাল দিতে পারেননি। ভোরের দিকে মৃত্যু হয় ওই তরুণের।
একমাত্র সন্তানকে হারিয়ে বাড়িতে জ্ঞান হারিয়েছেন মা। বাবা অন্য আত্মীয়দের কাঁধে ভর রেখে বসে আছেন হাসপাতালে। ছেলের দেহ ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়ার অপেক্ষায়। হাহাকার করে উঠছেন মাঝেমধ্যেই, ’’ ওই স্কুলের সঙ্গে কোনওভাবেই তো কোনও যোগ ছিল না ওর। শুধু শুধু প্রাণটা চলে গেল।
Be the first to comment