পূর্ব নির্ধারিত নবান্ন অভিযান কর্মসূচি বাতিল করল বঙ্গ বিজেপি। পরিবর্তে ২৬ সেপ্টেম্বর বুধবার বাংলা জুড়ে ১২ ঘন্টা বনধের ডাক দিলেন রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ। শনিবার বিকেলে দক্ষিণ দিনাজপুরের একটি জনসভা থেকে এই ঘোষণা করেন তিনি।
শুধু বিজেপি নয়, এ দিন সরকার বিরোধিতায় ফোঁস করেছে আরএসএসও। ইসলামপুরে গুলির আঘাতে ছাত্র খুনের ঘটনার দায় প্রথম দিনই আরএসএসের ঘাড়ে চাপিয়েছিলেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তাঁর বক্তব্য ছিল, ইসলামপুরে আরএসএসই পরিকল্পনা করে হামলা চালিয়েছিল। পার্থবাবুর সেই বক্তব্যের তীব্র নিন্দা করে আরএসএস নেতা জিষ্ণু বসু বলেন, শিক্ষামন্ত্রীকে প্রমাণ করে দেখাতে হবে আরএসএস এই ঘটনায় জড়িত ছিল। নইলে তাঁকে ইস্তফা দিতে হবে।
জিষ্ণুবাবু আরও বলেন, সরকার বলছে পুলিশের গুলিতে ছাত্র খুন হয়নি। এটা বাজে কথা। স্থানীয় মানুষই বলছে, পুলিশের গুলিতেই দুই ছাত্র প্রাণ হারিয়েছে। আরএসএস দাবি করছে, গুলির ব্যালিস্টিক তদন্ত করতে হবে। সেই সঙ্গে গোটা ঘটনার তদন্তের ভার সিবিআইকে দিতে হবে।
আরএসএসের ওই নেতার কথায়, তর্কের খাতিরে যদি ধরে নিই যে পুলিশ গুলি চালায়নি, তা হলেও বুঝতে হবে পরিস্থিতি ভয়াবহ। এ ধরনের মারণ আগ্নেয়াস্ত্র সাধারণ মানুষের কাছে আসছে কী ভাবে?
এ দিকে ইসলামপুরের দাড়িভাটা স্কুলে হিংসার ঘটনার প্রতিবাদ করে সোমবারই কলকাতায় মহা মিছিলের ডাক দিয়েছে বিজেপি-র ছাত্র সংগঠন। তবে সূত্রের খবর, ওই মিছিল সফল করতে গোটা গেরুয়া শিবির সে দিন পথে নামতে পারে। তা ছাড়া রবিবার নিহত দুই ছাত্রের বাড়িতে প্রতিনিধি দল পাঠানোরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিজেপি। ওই প্রতিনিধি দলে থাকবেন মুকুল রায়, লকেট চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ রাজ্য নেতা।
বিজেপি যে চাপ বাড়াতে শুরু করেছে তা ভালমতই বুঝতে পারছে বাংলার শাসক দল। মুখ্যমন্ত্রী এখন বিদেশ সফরে রয়েছে। তাঁর অনুপস্থিতিতে মন্ত্রিসভা ও দলের নেতারা যে পরিস্থিতি সামাল দিতে পারছেন না তাও স্পষ্ট। এই অবস্থায় শনিবার ইতালির মিলান শহরে বসেই বিজেপি-র বিরুদ্ধে তোপ দাগেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বলেন, বাংলায় কোনও ভাবেই বনধ হতে দেব না। শান্তিপূর্ণ ভাবে বনধের মোকাবিলা করা হবে। পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের মতই মুখ্যমন্ত্রীও ইসলামপুর কাণ্ডে বিজেপি-আরএসএস-কেই কাঠগড়ায় তুলেছেন। সেই সঙ্গে হুঁশিয়ার করে বলেছেন, দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার করা হবে। তা ছাড়া মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, পুলিশের গুলিতে ছাত্র খুন হয়নি। তা ময়নাতদন্তের রিপোর্ট থেকে জানা গিয়েছে।
যদিও, সমস্ত বিরোধী দলই ইসলামপুর কাণ্ডে পুলিশের দিকে আঙুল তুলেছে। শুক্রবার হাসপাতালে গিয়েছিলেন সিপিএমের রায়গঞ্জের সাংসদ মহম্মদ সেলিম। নিহত ছাত্রের বাড়িতে যান কংগ্রেসনেত্রী দীপা দাশমুন্সিও। শনিবার ইসলামপুর ইস্যুতে রাস্তায় নামে বিজেপি-র ছাত্র সংগঠন এবিভিপি। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখায় তারা। রাস্তা অবরোধের কর্মসূচি নেয় বাম ছাত্র-যুব সংগঠনগুলিও।
Be the first to comment